বিত্তশালীদের কেনাকাটা বাড়লেও ক্রয়ক্ষমতা কমছে মধ্যবিত্তের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২১:৪৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: এবার ঈদে অভিজাত শপিংমলগুলোয় লাইন ধরে ক্রেতারা প্রবেশ করছেন। পছন্দের পোশাকও কিনছেন তারা। এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে নি¤œ ও মধ্যবিত্তের মার্কেটে। ক্রেতা তুলনামূলক কম। মার্কেটে এলেও দাম শুনে পছন্দের পোশাক কিনতে পারছেন না। বিভিন্ন দোকান ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
ঈদের সময় পাঞ্জাবির দোকানে তুলনামূলক বেশি বেচাকেনা হয়। সম্প্রতি পাঞ্জাবির বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইল্লিয়্যিন। নামিদামি শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ক্রেতাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। আউটলেটের বাইরে ক্রেতারা সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছেন। ভেতর থেকে কেউ বের হলে ঢুকছেন অন্য ক্রেতা। ব্র্যান্ডের পণ্যের মূল্যও আকাশছোঁয়া। কথা হয় সে শোরুমের এক জ্যেষ্ঠ বিক্রয় সহকারীর সঙ্গে। ব্যবস্থাপনা পর্ষদের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেচাবিক্রি সম্পর্কে সরাসরি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। তবে নাম প্রকাশ হবে না নিশ্চিত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে পাঞ্জাবির চাহিদা বেড়েছে। অনেক ক্রেতাকে আমরা ঠিকমতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। অধিকাংশ পাঞ্জাবির সাইজ শেষ। অবশিষ্ট একটি-দুটি সাইজে মিললে পাঞ্জাবি পাচ্ছেন ক্রেতারা। এর পরও দৈনিক ৪শ’র বেশি পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে এ আউটলেট থেকে। এসব পাঞ্জাবির দাম ৩ হাজার ৬৫০ থেকে শুরু হয়ে ৯ হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।’
পাঞ্জাবির আরেকটি শোরুম ইনচার্জ রিয়াজ হোসেন রাজু জানান, তারা দৈনিক ২৫০-৩০০টির বেশি পাঞ্জাবি বিক্রি করছেন। দাম ২ হাজার ৫০০ থেকে শুরু হয়ে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে অনেক সময় গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সাইজ দিতে পারেন না তারা। রিয়াজ হোসেন রাজুর ভাষ্য, তাদের প্রতিটি শোরুম একটি ডিজাইনের ১২টি করে পাঞ্জাবি পায়। অনেক সময় নির্দিষ্ট ডিজাইনের পাঞ্জাবি সাইজ অনুযায়ী সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ চাহিদার বিপরীতে উৎপাদনে সীমাদ্ধতা রয়েছে। দেখা গেল, প্রদর্শনী থেকে গ্রাহক পাঞ্জাবি পছন্দ করে সাইজ মিলিয়ে দিতে বলছেন, স্টোরে গিয়ে দেখা যায় ওই সাইজ বিক্রি হয়ে গেছে।
পাঞ্জাবি কিনে বেরিয়েছেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম। হাতে বেশ কয়েকটি ব্যাগ দেখে জিজ্ঞেস করতেই জানালেন চারটি পাঞ্জাবি কিনেছেন তিনি। কামরুল হাসান বলেন, ‘ঈদে যা কিছুই হোক সবারই নতুন পাঞ্জাবি লাগে।’ দাম বেশি হলেও পরিবারের লোকদের খুশি করতে ব্রান্ডের পাঞ্জাবি কিনেছেন তিনি।
তুলনামূলক বিপরীত চিত্র পাওয়া গেল হকারমার্কেট ও সাধারণ মার্কেটগুলোতে। সাধারণত মধ্যবিত্তরা এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। মার্কেটে মানুষের ভিড় থাকলেও বিকিকিনি সে অনুযায়ী হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ক্রেতারা মার্কেটে আসেন ঠিকই। জামাকাপড়ও হাতে নিয়ে দেখেন। তবে অধিকাংশ না কিনে চলে যান। পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, ‘এ বছর আশানুরূপ বিক্রি করতে পারিনি। ক্রেতারা পোশাক কিনতে এসে দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। দিনে ২০-২৫টির বেশি পাঞ্জাবি বিক্রি করতে পারছি না।’