বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে বৃক্ষ নিধনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ৫:৪৮:২২ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শহরতলীর বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক থেকে রাতের আধারে প্রায় দেড় কোটি টাকার বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খোদ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চুরি হবার পাশাপাশি কিছু ঝড়ে পড়া গাছও ছিল। মোট ২০টির মত বৃক্ষ কাটা গেছে’।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেট (সদর দপ্তর, মৌলভীবাজার) এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, চুরির ঘটনায় রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ বন বিভাগের ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। মামলাও হয়েছে। প্রতিবেদন দাখিলের পর আমরা জবাব চেয়েছি তাদের কাছে। মূল বিষয়টি পরে জানা যাবে। মামলা কয়টা হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, ৩/৪টি মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, কমিটির কাছে আমরা জানতে চেয়েছি বিষয়গুলো। কাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এমনটি জানতে চাইলে তিনি আসামীদের নাম বলেননি এবং কবে নাগাদ জবাব আসতে পারে সেটাও বলেননি।
দীর্ঘদিন যাবৎ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেট (সদর দপ্তর, মৌলভীবাজার) এর অধিনে থাকা প্রায় দেড় কোটি টাকার মূল্যবান বৃক্ষ প্রতিনিয়ত কেটে পাচার করছে একটি সক্রিয় চক্র। বৃক্ষ চুরির ঘটনায় দৈনিক জালালাবাদে ১০ ফেব্রুয়ারি ‘বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক থেকে প্রতিনিয়ত গাছ চুরি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলে নড়েচড়ে বসে বনবিভাগ। এর পর থেকেই প্রতিবেদন দাখিল করতে কমিটিকে চাপ দেয়া হয়।
বর্ষিজোড়া ইকোপার্কের গহীন বনে গেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইকোপার্কের পিছনের মূল্যবান শাল গাছ কাটা হয়েছে। শুধু ওই স্থানের কাটা গাছ দেখে মনে হয়েছে, কিছু বৃক্ষ সম্প্রতি ও কিছু বৃক্ষ মাস ছয়েক আগের কাটা। এভাবে বনের বহু টিলায় গিয়ে দেখা যায়, বনের প্রায় ৩শ গাছ উধাও। চালাক চোরেরা গাছ কেটে কোন প্রমাণ রেখে যায়নি। বৃক্ষের ডাল-পালা তো দূরের কথা, কাটা স্থানের গাছের ছালও পাওয়া যায়নি। ওই বনে বেশি শাল গাছ থাকায় অনেকে এর নাম দিয়েছেন শালবন। বনে দুজন সশস্ত্র পাহারাদার থাকার পরেও কিভাবে এতা বৃক্ষ চুরি হয় এমন প্রশ্ন রেখেছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, পাহারাদারদের যোগসাজসে এসব বৃক্ষ চুরি হচ্ছে। তারা জানান, পুরাতন একটি পূর্ণবয়স্ক চল্লিশোর্ধ্ব শালের দাম ১ লাখ টাকার উপরে। মধ্যবয়সী গাছ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের। এই হিসেবে ৩শ বৃক্ষের দাম সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা করে ধরা হলে দাম পড়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।