গরমে জনজীবনে নাভিশ্বাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৯:০৩:৩৬ অপরাহ্ন
চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে সারাদেশের মতো কয়েকদিনের তীব্র গরমে জনজীবনে নাভিশ^াস উঠেছে । শিশু এবং বৃদ্ধদের সাথে বড়োদেরও গরমে কাহিল অবস্থা। গরমে নাজেহাল অবস্থা শ্রমজীবীদেরও। ঘেমে ঠান্ডা ও সর্দিজ¦রে আক্রান্ত অনেকে। এদিকে গরমের মধ্যে সিলেটের কোথাও কোথাও ব্রজসহ শিলাবৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও গরম ছিলো অসহনীয় এবং অস্বস্তির।
এদিকে, চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় গতকাল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া অফিস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। তীব্র খরতাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জনপদের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। অসহনীয় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বয়স্ক ও শিশুরা।চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরো কয়েক দিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।
এদিকে, সিলেটে সকালের দিকে আকাশ মেঘে থাকলেও গরমের অনুভূতি ছিল তীব্র। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের দেখা মিলে। প্রখর রোদের সাথে বাড়ে গরমের তীব্রতা। রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে আসে। ঘেমে জবুথুবু হয়ে দু একজন রিকশাওয়ালাকে যাত্রী নিয়ে চলতে দেখা যায়। ঈদের রেশ থেকে যাওয়ায় অন্যান্য সময়ের মতো ভ্রাম্যমাণ শরবত ও আইসক্রিমওয়ালাদের দেখা যায়নি। গোধূলিতে রোদের তীব্রতা কমেলেও গরম কমেনি। ভ্যাপসা গরমে একবার বেশি দুইবার যাত্রী নিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান রিকশাচালকরা।
হাসপাতাল ও ডাক্তারখানায় ঠান্ডা ও সর্দি-জ¦রের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব রোগীর বেশিরভাগ শিশু। মূলত গরমে ঘেমে তাদের ঠান্ডায় এই সমস্যা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। তারা গরমে শিশুদের হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে আবহাওয়ার খবরে অধিদপ্তর জানিয়েছে সিলেট বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। বুধবার আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকাঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকাঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি দেশের কিছু কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।