জকিগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে নানা গুঞ্জন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৬:১৩:০০ অপরাহ্ন
এখলাছুর রহমান, জকিগঞ্জ থেকে: ২৫ মে চতুর্থ ধাপে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে জকিগঞ্জে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা আলোচনা পর্যালোচনা। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. লোকমান উদ্দিন চৌধুরী আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া অনেকটা নিশ্চিত। নতুন কে কে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন সেটাই এখন জকিগঞ্জের নির্বাচনী মাঠের প্রধান আলোচনার বিষয়।
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন দলীয়ভাবে না হলেও কোন দলের কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। জকিগঞ্জ আওয়ামীলীগে রয়েছে এখন তিনটি ধারা। সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার সমর্থিত গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী। এ গ্রুপ থেকে তিনিই চেয়ারম্যান প্রার্থী।
গত সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবিরের গ্রুপ থেকে কে বা কারা প্রার্থী হতে পারেন তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।
সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তাপাদার, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, রমনা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল মনির চৌধুরী, জাতীয় যুব সংহতির সিলেট জেলার সাবেক সভাপতি মর্তুজা আহমদ চৌধুরী, জাপা নেতা এড. সিরাজুল হক, জাপা নেতা আব্দুস শুকুর, উপজেলা জামায়াতের আমির, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম রুকবানী চৌধুরী জাবেদ, জকিগঞ্জ উপজেলা কওমী মাদাসা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল হাসান, আঞ্জুমানে আল ইসলাহ থেকে হাফিজ মাসুম আহমদ দুধরচকী এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইসলামের উপজেলা শাখার সহসভাপতি মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান, কসকনকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল মন্নান লস্করের ছেলে ফারুক আহমদ লস্কর আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে লোকমুখে প্রচার রয়েছে।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরীর বিরোধীবলয় কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে একজন শক্তিশালী প্রার্থী মাঠে নামানোর জন্য। এক্ষেত্রে তারা মনে করছেন মুফতি আবুল হাসানই হবেন যোগ্য প্রার্থী। মুফতি আবুল হাসানের মামা প্রয়াত মাওলানা উবায়দুল হক উজিরপুরী ছিলেন সংসদ সদস্য। ধর্মীয় নেতা হিসাবে জকিগঞ্জে মুফতি আবুল হাসানের আলাদা ইমেজ রয়েছে। এই ইমেজকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে মাঠে মোকাবেলা করতে চায় লোকমান বিরোধী পক্ষ।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদারের ঘনিষ্টজন হিসাবে উপজেলাজুড়ে নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের কাছেও তিনি ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তৃণমূল পর্যায়ে দলেও রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনজুমানে আল ইসলাহ সমর্থিত প্রার্থী না থাকলে লোকমান উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী সমর্থকদের সমর্থন পেতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোটও জকিগঞ্জে নির্বাচনে প্রভাব ফেলে। তাছাড়া নির্বাচন এলেই সম্প্রদায়গত ভোটের হিসাব নিকাশও সামনে চলে আসে বরাবরই। গত নির্বাচনে লোকমান উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতিকে ৪৮ হাজার ২৩৯ ভোট পেয়েছিলেন। তার নিকট নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মরতুজা আহমদ লাঙ্গল প্রতিকে পেয়েছিলেন ১১ হাজার ৩৫২ ভোট। বর্তমানে জকিগঞ্জে প্রায় ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৪২৮ জন ভোটার রয়েছেন। লোকমান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে। আগামীতে নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো।
মুফতি আবুল হাসান বলেন, নির্বাচন করার জন্য আমাকে অনেকে উৎসাহ দিচ্ছেন, এ ব্যাপারে এখনো কিছু ভাবিনি।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ বলেন, আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সমর্থক ও শুভার্থীরা আমাকে নির্বাচন করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। গোলাম রোকবানী চৌধুরী বলেন, সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাইছি।