মৌলভীবাজারের ৫টি উপজেলায় প্রচারণায় ৫৬ প্রার্থী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ৬:০৩:১৬ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের ৫ উপজেলায় দুই ধাপের নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী ৫৬ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ২০জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পুরুষ ২৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আরো ১১ জন। এর মধ্যে দুই উপজেলায় মাত্র ১ জন করে প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন দুই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এদিকে, বড়লেখায় চেয়ারম্যান পদে বাপ-বেটা ও জুড়ী উপজেলায় ভাইয়ে-ভাইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলায় নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। দ্বিতীয় ধাপের আগামী ২১ মে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মাত্র দুইজন। দু’জনই আ’লীগের। জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আ’লীগ নেতা ও মোস্তফাপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম তাজ। জেলা সদরে আ’লীগ ঠিক আগের মত দুইভাগে বিভক্ত থাকায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আ’লীগ সভাপতি নেছার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমানসহ বড় বলয়ের আস্থাভাজন মোঃ কামাল হোসেন। এদিকে, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলয়ের আশির্বাদপ্রাপ্ত তাজুল ইসলাম শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চাইছেন। উপজেলা নির্বাচনে উভয় বলয়ের প্রার্থী থাকায় শহরে ভোটের মাঠ উত্তপ্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে সদর উপজেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে এমনটা দাবী করছেন খোদ আ’লীগ নেতা-কর্মীরা। ওই উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শহীন রহমান মাত্র একক প্রার্থী ।
মৌলভীবাজার সদর আসনের অন্তর্ভুক্ত রাজনগর উপজেলায় আ’লীগে আ’লীগে শক্ত ভোট যুদ্ধ হতে পারে এমনটা দাবী করেছেন স্থানীয়রা। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ শাহজাহান খান, ১৯৭৮-১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে কাজ করে যাওয়া ও সাবেক মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ সদস্য রওনক আহমেদ। জানা গেছে, মোঃ শাহজাহান খান বর্তমান সংসদ সদস্যের একান্ত আস্থাভাজন হয়ে আছেন আর রওনক আহমেদ জেলা আ’লীগের হেভিওয়েট নেতাদের সাথে আশির্বাদপ্রাপ্ত হওয়ায় আগামী নির্বাচন আ’লীগ পরিবারেও দুই মেরুতে রূপ নিতে পারে। তবে দলীয় কোন প্রতীক না থাকায় সাংঘর্ষিক রূপরেখার মাত্রা অনেকটা কমে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজন। সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও খেলাফত মজলিসের সাবেক জেলা সভাপতি আহমদ বিলাল ও কামারচাক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা মোহাম্মদ নজমুল হকও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন একই পদে। এই উপজেলায় সকল পদের মোট প্রার্থী ১৩ জন ।
এদিকে, বড়লেখায় প্রতীক পেয়ে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় রাহেনা বেগম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোয়েব আহমদ, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়েছেন মোঃ আজির উদ্দিন ও তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসান ও সরব প্রার্থী। এই উপজেলায় সকল পদের মোট প্রার্থী ৯ জন।
জুড়ী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ মোঈদ ফারুক, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, তার ভাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কবির উদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কিশোর রায় চৌধুরী মনি, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাশ ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ আলী হোসেন। জামায়াতের ঘাঁটিখ্যাত জুড়ী উপজেলায় সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান। মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় এক জামায়াত নেতা।
অপরদিকে, কুলাউড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুল হক খান, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি কামাল হাসান ও উপজেলা আ’লীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় মোট প্রার্থী ১১ জন।