তীব্র গরমে ব্যবসায় স্থবিরতা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ৯:০৪:১৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: তীব গরমে সিলেটের ব্যবসা বাণিজ্যে অনেকটা স্থবিরতা নেমে এসেছে। খুব প্রয়োজন না হলে লোকজন বাসাবাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না ফলে কমেছে বিক্রি। এমনকি গরমের সময় বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা শরবত ও পানীয়ের ব্যবসাও কমেছে, যা গরমে সাধারণত বাড়ে। এর কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন অন্য সময় গরম থাকলেও এত তীব্র থাকেনা, তাই লোকজন কাজে বের হন, ক্লান্ত হলে শরবত-আইসক্রীম খান। কিন্তু কিছুদিন থেকে দিনের বেলা অনেকটা হরতালের দিনের মতো মনে হচ্ছে। ফলে লোকজন না পণ্য বিক্রি হবে কার কাছে। তবে ফ্যানের বিক্রি কিছুটা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।
শনিবার দুপুরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিপনীবিতান ও দোকানপাঠ ঘুরে দেখা যায় ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। রাস্তাঘাটে লোকজন কম। বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানের গ্লাসের দরজা খুলে রাখা হয়েছে। দোকানীরা বলেন ঈদের পর বিক্রি কিছুটা কমে যায়। ঈদের দুইসাপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। এখন বিক্রি বাড়ার কথা, কিন্তু গরমের জন্য লোকজন বের হতে পারছেন না, তাই বিক্রি কম। ক্রেতা কম, বারবার বিদ্যুৎ যায় আসে তাই এয়ারকন্ডিশন বন্ধ রেখেছি।
নগরীর জিন্দাবাজারে জুতার দোকান পায়ে পায়ে’র কর্মী শাওন জানান ঈদে বিক্রি ভালো হয়েছিল, ঈদের পর থেকে মার্কেট মন্দা। এখন গরমে লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না তাই ক্রেতাও নেই। যা অল্প কয়েকজন আসেন তাদের চমড়ার জুতার দিকেই ঝুঁক বেশি। গরম না থাকলে চামড়া ছাড়া অন্যজাতের জুতাও বিক্রি হতো।
ব্যবসার মন্দা অবস্থা পোশাকের দোকানেও। শাড়ি বা পোশাকের বিক্রি যা হচ্ছে তার বেশিরভাগ বিয়ের বাজারে ক্রেতা বলে জানান বিক্রেতারা। এরবাইরে সাধারণ পোশাক খুব কম বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছু ভালো অবস্থা ফ্যানের দোকানে। নগরীর জিন্দাবাজারের প্যারিস ম্যানসনের মা ইলেকট্রিকের কর্ণধার মো. আলিম উদ্দিন জানান, গরম বাড়ায় ফ্যানের বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। এবার অত্যাধিক গরম পড়ায় অনেকে পুরনো ফ্যান পাল্টে নতুন ফ্যান লাগাচ্ছেন। তাই বিক্রি বেড়েছে। তবে গরমের সময় তা স্বাভাবিক বলে জানান তিনি।
শরবত বিক্রেতা ফারুক আলী জানান তিনি দুই চাকার গাড়িতে সিজনাল ব্যবসা করেন। গরমের সময় প্রতিবছর লেবুর শরবত বিক্রি করেন। বিক্রি ভালো থাকে। গরম বাড়লে বিক্রিও বাড়ে। কিন্তু এবার এমন গরম পড়লো মানুষ রাস্তায়ই বের হতে পারছেনা। তাছাড়া গরমে ডায়রিয়াসহ নানান পানিবাহিত রোগের প্রচারও বৃদ্ধি পেয়েছে তাই যারা বের হন তারাও অসুস্থ হওয়ায় শঙ্কায় রাস্তায় শরবত খেতে চান না। সব মিলিয়ে গরমে জমজমাট শরবতের বিক্রিও ভালো নেই।
সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শিপন খান বলেন, গরমকালে গমর পড়বে এটা স্বাভাবিক কিন্তু এবার যে টানা গরম পড়ছে তা আগে দেখা যায়নি। যদিও দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে সিলেটে গরম কম কিন্তু বাইরে রোদ ঠিকই আছে, এরসাথে লোডশেডিংও যোগ হয়েছে। কড়া রোদে লোকজন খুব একটা বের হচ্ছেন না। তাছাড়া মাত্র দুই সাপ্তাহ আগে ঈদুল ফিতর গেল অনেকে তখন কেনাকাটা করেছেন। এই গরমে তাই তারা আর হয়তো বের হতে চাইছেন না।