জকিগঞ্জে অবৈধ যানবাহন বেপরোয়া সড়কে আবারও ঝরলো তিন প্রাণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ৬:০২:৪৮ অপরাহ্ন
এখলাছুর রহমান, জকিগঞ্জ থেকে: সিলেটের জকিগঞ্জে পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে মেইন রাস্তা দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যানবাহন ট্রাক্টর, দশসিটা, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সসহ কাঁকড়া গাড়ি। ফলে অবৈধ যানবাহনের দাপটে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। আর যানজট তো আছেই। সাধারণত কৃষিজমির মাটি কাটা, ভারী মালামাল টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয় ট্রাক্টর নামের এই বাহন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে ঘটছে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা।
অপ্রাপ্তবয়স্ক, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের দ্বারা পরিচালিত এসব বাহন অহরহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি জকিগঞ্জে একমাসের ব্যবধানে প্রায় ৮ থেকে ১০টির মতো ছোটখাটো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। হতাহত হয়েছে বহু লোক। সবশেষ গতকাল রোববার জকিগঞ্জ উপজেলার বারঠাকুরী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য ছাদ উদ্দিনের ছেলে রেদোয়ান আহমদ (২২), একই গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে দেলোয়ার আহমদ (৩৮) ও মঈন উদ্দিনের ছেলে মঞ্জুর আহমদ (২০) ট্রাক্টরের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনায় আলোচনার জন্ম দেয় ট্রাক্টরের বিষয়টি। মেইন রোড ব্যবহারের অনুমতি না থাকলেও এক আদৃশ্য দাপটে চলছে এ সব মরনঘাতি অবৈধ যনবাহন।
ছেলে মেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে ব্যাপক টেনশনের মধ্যে থাকতে হচ্ছে অভিভাবকদের। তারপরেও যেন অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের কোন তদারকি নেই। ফলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এ সব যানবাহন।
বিশেষ করে উপজেলার বাবুর বাজার, শরীফগঞ্জ, রতনগঞ্জ বাজার, মাসুম বাজার ও ঈদগাহ্ বাজার এলাকায় মাটিকাটার এ সব ট্রাক্টর সিলেট টু জকিগঞ্জ জনপথের রাস্তা কর্দমাক্ত করে পিচ্ছিল করে মরণ ফাঁদ হিসেবে তৈরি করেছে। ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঝরছে অসখ্য প্রাণ, পঙ্গুত্ববরণ করছে অসংখ্য টগবগে মানুষ।
পথচারীদের কাছে এ সব যানবাহন এক দানবের নাম। ট্রাক্টর চলাচলের ফলে একের পর এক নষ্ট হচ্ছে সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরিবহন করা মাটি ও বালু সড়কে পড়ে থাকায় সড়ক ধুলাবালিতে ভরে যায়। এই দুর্ভোগে অতিষ্ঠ এলাকার জনজীবন। অন্যদিকে রাত-দিন বেপরোয়া গতিতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন।
উপজেলার একাধিক জনপ্রতিনিধিরা জানান, উপজেলার পৌর শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের যেকোনো স্থানে একটু দাঁড়ালেই চোখে পড়বে বিকট শব্দে বালু, ইট কিংবা রড-সিমেন্টসহ নানা রকম মাল বোঝাই করে এইসব বাহন সড়ক কাঁপিয়ে চলছে। শহর ও আশপাশের ব্যস্ততম সব সড়ক এখন এসব অবৈধ যানবাহনের দখলে। এদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে এখন প্রায় সব রাস্তায় আতঙ্কের নাম। এসব মাহিন্দ্র ট্রাক্টর ও কাঁকড়া গাড়ি কেবল জমি চাষের অনুমোদন থাকলেও রাস্তায় এসব যানবাহন চলাচলের কোনো অনুমতি নেই। আর এসব মাহেন্দ্র ট্রাক্টরের মালিকেরা বেশির ভাগই প্রভাবশালী লোকজন হওয়ায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয় না প্রশাসন। অসহায় উপজেলাবাসীর জিজ্ঞাসা কবে আসবে এসব যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ; কর্তৃপক্ষের আদৌ কী বোধদয় হবে?