সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মে ২০২৪, ৯:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দফায় দফায় বন্ধের পর রোববার খুলেছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নির্দেশনা মোতাবেক বন্ধ রয়েছে অ্যাসেম্বলি। এক শিফট চালু থাকায় সকাল ৮টা থেকে পাঠদান শুরু হয়ে চলেছে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এক শিফটে পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। দুই শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া তাপপ্রবাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
টানা কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বেশী থাকলেও ব্যতিক্রম ছিল সিলেট। রোববারও দিনভর সিলেটের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সকাল ১০টার দিকে নগরীর ব্যস্ত রাস্তার পাশে একটি বিদ্যালয় থেকে কিছুক্ষণ পর পর ভেসে আসছে কোমলকণ্ঠে উচ্চারিত বর্ণমালার মধুর আওয়াজ। খাদ্য সংরক্ষণের উপায় নিয়ে পাঠদান করছেন শিক্ষক। মনোযোগী হয়ে শুনছে শিক্ষার্থীরা। প্রত্যেকের সঙ্গেই রয়েছে পানির বোতল। সবগুলো জানালা খোলা। মাথার ওপরও ঘুরছে বৈদ্যুতিক পাখা।
নগরীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জানান, এক শিফটেই ক্লাস চলছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অ্যাসেম্বলি বন্ধ রেখেছি। নির্দেশনা মেনে পুরোদমে ক্লাস চলছে।’
দিন কয়েক আগে তীব্র গরমেও স্কুল খোলা থাকার তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ঐ শিক্ষিকা বলেন, ‘স্কুল মাঝে খুলেছিল। খুবই গরম ছিল তখন। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।এতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বেশ কম ছিল। এখন গরম কিছুটা সহনীয়, ফলে উপস্থিতিও বেড়েছে। তবে নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক এখনো বন্ধ রয়েছে । এটা ভালো।’
এদিকে দেশের সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাপপ্রবাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি শর্ত রয়েছে। সেই শর্তগুলো হলো, শিক্ষা কার্যক্রমের যে অংশটুকু শ্রেণিকক্ষের বাইরে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে হয় সেসব কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। অন্যদিকে, তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেকটা স্বস্তি রয়েছে অভিভাবকদের মাঝেও। সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েও সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।
নগরীর একটি কেজি স্কুলের সামনে অপেক্ষমান অভিভাবক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলছে। সিলেটে গরম এমনিতেই কম ছিল। বর্তমানে আগের চেয়ে আরো কমেছে। সেজন্য অভিভাবকেরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। গরমের কারণে সন্তান জ্ঞান হারিয়ে কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ে কি না সেই শঙ্কা কাজ করেছিলো অভিভাবকদের মাঝে। তবে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয় নি। ফলে অভিভাবকদের মাঝে তেমন কোনো উদ্বেগ নেই। আমরা চাই এই শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক।’
তবে দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবকদের মাঝে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও সচেতন হওয়া এবং পূর্ব প্রস্তুতি রাখা উচিত বলে মনে করেন তারা।
একাধিক অভিভাবক বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো দেখা দিবেই। অতি শীত, অতি গরমের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত আগেই থেকেই প্রস্তুতি রাখা। এবার সেই পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতি না থাকার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির বিষয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং খোলা নিয়ে এমন বিষয়গুলো অভিভাবকদের সন্তানের শিক্ষাজীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তাই আমরা চাই সরকার এমন পদক্ষেপ নেবে যেন ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব না ঘটে।’