সম্পদে এগিয়ে সোয়েব শিক্ষায় রফিকুল, পিছিয়ে আজির উদ্দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০২৪, ৯:২৪:৩৬ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: বড়লেখা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীর চার জনই আওয়ামী ঘরানার। প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, সম্পদে এগিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ। ৫ বছরে বেড়েছে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, কৃষি জমি, বাণিজ্যিক দালান, ব্যাংক ব্যালেন্স ও বার্ষিক আয়। শিক্ষায় এগিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর। এছাড়া শিক্ষায় ও সম্পদে আওয়ামী লীগ নেতা আজির উদ্দিন অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে। তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসান রয়েছেন শিক্ষায় এগিয়ে। আগামি ৮ মে বুধবার প্রথম ধাপে বড়লেখার ১০ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ি ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী সোয়েব আহমদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। ২০১৪ সালের হলফনামায় ছিল তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। পেশায় ঠিকাদারী ব্যবসা। ৫ বছরে তার কৃষি জমি বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশি ৯২.২৪ শতাংশের স্থলে ২ একর ৩৩.২৪ শতাংশ। যার অর্জিত মূল্য ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ৫ বছর আগে কৃষি জমি থেকে বছরে ১ লাখ টাকা আয় করলেও বর্তমানে ২ একর ২৪ শতাংশ কৃষি জমি থেকে নেই কোনো আয়। আছে ৬২ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ ভূমিসহ বাণিজ্যিক দালান। ঠিকাদারি ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৩১৫ টাকা। ৫ বছর আগে আয় করতেন ১৫ লাখ টাকা। ব্যাংকে শেয়ার/সঞ্চয়পত্র আমানত ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সম্মানি ভাতা থেকে আয় করেন ৫ লাখ ৪০ হাজার। হাতে নগদ আছে ১ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৬ টাকা। ৫ বছর আগের ব্যাংক ব্যালেন্স ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৯১২ টাকা। রয়েছে ৫ বছর আগের ১৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি জীপ গাড়ি। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ তোলা স্বর্ণালংকার, ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার একনলা শর্টগান ও ২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী (অর্জনকালিন), যৌথ মালিকানায় একটি পাকা বাড়ি। ঠিকাদারি কার্যাদেশের উপর ব্যাংক দেনা ৩৭ লাখ ৯৯৬ টাকা, এফডিআরের বিপরীতে ব্যাংক লোন ৫১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৬ টাকা। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পাখিয়ালা করাতকলের বিপরীতে লোন ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকা, ২০১৪ সালে ছিল ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯১ টাকা। মাহাদী ট্রেডার্সের নামে লোন ২৫ লাখ ৫ হাজার ৩৯৯ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ৪১ লাখ ২৬ হাজার ১২০ টাকা।
আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম সুন্দরের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসএস (রাষ্ট্র বিজ্ঞান)। পেশায় তিনিও ব্যবসায়ি। অর্জনকালিন ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ৯৯ শতাংশ কৃষি জমি। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ লাখ টাকার ৩৭ শতাংশ কৃষি জমি। ২৫ লাখ টাকার বসতবাড়ি। কৃষিখাতে বছরে আয় ৭৫ হাজার, ব্যবসা খাতে ৩ লাখ ৫১ হাজার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে আছে ১৫ লাখ টাকা ব্যাংক লোন। হাতে নগদ টাকা রয়েছে সাড়ে ৫ লাখ, স্ত্রীর কাছে ১ লাখ ২৫ হাজার, ব্যাংকে জমা ব্যবসার ৭ লাখ ২০ হাজার ও মূলধন বাবত ১ লাখ ৫৫ হাজার। স্ত্রীর রয়েছে ১ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার এবং নিজের ১ লাখ টাকার ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্র।
মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী আজির উদ্দিন অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে শিক্ষায় ও সম্পদে পিছিয়ে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। পেশায় ব্যবসায়ী। কৃষি খাতে বছরে আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে পান আরো ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। হাতে নগদ ২ লাখ টাকা। নির্ভরশীলদের হাতে আছে আরো ২ লাখ টাকা। স্ত্রীর কাছে আছে ২০ হাজার টাকা ও ব্যাংকে জমা ২০ হাজার। আছে ৫০ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র। নিজের নামে রয়েছে ৫৩ শতাংশ কৃষি জমি যার অর্জনকালিন মূল্য ৭ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার ৩০ শতাংশ। আছে যৌথ পৈত্রিক ১৫ একরের একটি বাড়ি। চলিত ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে সম্মানি ভাতা থেকে আয় করেছেন ৫৪ হাজার টাকা। তার নেই কোনো ব্যাংক লোন।
উট প্রতীকের প্রার্থী মাসুম আহমদ হাসান মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আজির উদ্দিনের জ্যেষ্ঠ ছেলে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। তিনিও পেশায় ব্যবসায়ি। ব্যবসা থেকে বছরে আয় ৩ লাখ টাকা। হাতে নগদ টাকা আছে ১ লাখ, স্ত্রীর কাছে ১০ হাজার। ব্যাংক ব্যালেন্স মাত্র ১ হাজার। নিজের রয়েছে ১২ লাখ টাকার একটি জীপ গাড়ি। স্ত্রীর আছে ৭ তোলা স্বর্ণ। দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র। নিজের নামে ১৫ লাখ টাকার ১ একর কৃষি জমি, আছে একটি পৈত্রিক বাড়ি। নেই কোনো ব্যাংক লোন।