বৈশাখে শীতের আবহ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০২৪, ২:০০:৩৬ অপরাহ্ন
*সিলেটে ১২ ঘন্টায় বৃষ্টি ৬৩ মি.মি, তাপমাত্রা ১৯.৭*সিলেট-সুনামগঞ্জের নদীগুলোতে বাড়ছে পানি
![](https://dailyjalalabad.com/files/uploads/2024/05/weather-2.jpg)
জালালাবাদ রিপোর্ট : এপ্রিলজুড়ে ইতিহাসের দীর্ঘতম তাপপ্রবাহে পুড়েছে দেশে। গরমে রাজশাহী, বরিশাল, যশোর, চুয়াডাঙ্গা আর রাজধানী ঢাকার মানুষের অবস্থা ছিলো কাহিল। এরমাঝে ব্যতিক্রম ছিলো সিলেট। এপ্রিলেও সিলেটের আবহাওয়া তুলনামুলক ছিলো স্বস্তির। তবে এই মে’তে এসে সিলেটের আবহাওয়া আরো শীতল হয়েছে। নেই রোদ কিংবা লু হাওয়ার দাপট। মধ্য বৈশাখেও সিলেটের আবহাওয়ায় শীতের আবহ।
সোমবার সকাল থেকেই আকাশে সূর্যের দেখা নেই, পুরো মেঘে ঢাকা। বইছে মৃদুমন্দ হাওয়া, সাথে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। আগের রাতেও বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে হয়নি। মন্থরগতিতে পাখা চললেও পাতলা কাঁথাটা গায়ে টেনে নিতে হয়েছে। শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। এ যেন অসময়ে প্রকৃতির বৈরী আচরণ।
গত কয়েক দিন অন্য অঞ্চলের খরতাপের ঝাঁজ কিছুটা হলেও ছিলো সিলেটে। মানুষজন পথ চলতে গিয়ে একটু ছায়ার প্রয়োজন অনুভব করছিল। একদিকে দরদর করে ঘাম ঝরছিল, আরেক দিকে গলা শুকিয়ে কাঠ। অফিস-আদালত, বাসাবাড়িতে বৈদ্যুতিক পাখাগুলো অনবরত ঘুরে চলছিল। কিন্তু সে দৃশ্যপট হঠাৎ পাল্টে গেল। পাখার ভনভনানি থেমে গেছে, উত্তরের হিমেল হাওয়া বইছে। গরমের উত্তাপ কমে গেছে। নেমে এসেছে খানিকটা শীতল পরিবেশ।
কাল সকালে নগর ও শহরতলির জনপদে ঘুরে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল আরোহীরা শরীরে বৃষ্টির জ্যাকেট পরে গন্তব্যে ছুটছেন। গ্রামের মাঠে যারা কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও স্বস্তি কাজ করছে।
অনেকে বলছেন, দুই দিন আগেও ছিলো গরম। আর এখন ঠান্ডা বাতাস।সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসেন বলেন, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। যেটাকে আমরা ভারী বৃষ্টিপাত বলি। একই সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় ও সামান্য শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ় মাস ছাড়া টানা বৃষ্টিপাত সাধারণত হয় না। সিলেট অঞ্চলে আবহাওয়া পরস্থিতি কিছুটা ব্যতিক্রম।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত হালকা বৃষ্টিপাত, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাত, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার ভারী এবং এর বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলা হয়।
সিলেটের নদ-নদীগুলো এখন ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে টুইটুম্বুর। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অঞ্চলের প্রধান নদীর সুরমার পানি অন্তত দুটি পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে, সুনামগঞ্জে দুদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা নদী, সীমান্ত এলাকার খাসিনারা, চেলা, চলতি নদীসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বর্ষা মৌসুম আসন্ন। এই সময়ে হাওর ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাবেই।
পাউবো আরও জানায়, যেহেতু এখনও সব হাওর পানিশূন্য তাই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে সময় লাগবে। নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করবে, হাওর ভরে তারপর বন্যা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা বাংলাদেশ আবহাওয়া অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, অব্যাহত পাহাড়ি ঢলের মধ্যেই ৫ থেকে ১৫ এপ্রিল এই ১০ দিন শক্তিশালী বৃষ্টিবলয়ের মধ্যে প্রবেশ করছে সিলেট। তীব্র বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে তারা।