পুলিশের অভিযানে ৭২ বোতল আটক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২৪, ৭:১৭:৪৮ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জের নারাইনপুর সীমান্তে ফুচকার লাইনে আসছে মাদক
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত যেন চোরাকারবারিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। মাসোহারা দিয়ে সীমান্তের ওপার থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে মাদক ফুচকাসহ বিভিন্ন পণ্য। প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে ফুচকা শাড়ি মেডিকেল সামগ্রীর সাথে আসছে মদ ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযানে নামমাত্র মাদক আটক করলেও বড় বড় চালান রয়ে যায় আড়ালে। প্রতি রাতে কোম্পানীগঞ্জের নারাইনপুর-চিকাডহরের সীমান্ত দিয়ে অর্ধ কোটি টাকার ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এই বর্ডার দিয়ে নতুন করে বিভিন্ন ব্রান্ডের মোটরসাইকেল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। যার ফলে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির সাথে বাড়ছে অবৈধ গাড়ির সংখ্যাও। সেই সাথে উপজেলার সর্বত্র বেড়েছে মাদকের ছড়াছড়ি। শুক্রবার রাতে ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই কাঞ্চন চক্রবর্তী নারাইনপুর সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৭২ বোতল ভারতীয় মেকডোয়েলস মদ আটক করেন। এ ঘটনায় মাদক কারবারী রজব আলীকে আসামি করে ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শফিউল ইসলাম বাদী হয়ে ১১ মে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে নারাইনপুর সীমান্তে ১২৪৭ পিলার হচ্ছে কালাসাদেক ও নোয়াকুট বিওপির সীমা। যার ফলে এই সীমান্তে কালাসাদেক ও নোয়াকুট ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা তেমন টহলে আসেন না। এছাড়া সীমান্ত এলাকা হওয়ায় পুলিশও টহল দেয় না। এই সীমান্তে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় এপার ওপার হতে কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় না চোরাকারবারীদের। ফলে উপজেলার সবচেয়ে নিরাপদ চোরাচালানের রোড হয়ে উঠতে শুরু করেছে নারাইনপুর সীমান্ত।
কয়েকজন চোরাকারবারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রতি মাসে জনপ্রতি ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে লাইন আনতে হয়। যাতে কোম্পানীগঞ্জের কোথাও কেউ আটক না করে। তবে উপর থেকে প্রেসার আসলে তারা আমাদেরকে বলে তখন আমরা সামান্য কিছু মাল তাদেরকে ধরিয়ে দেই। এ ছাড়াও প্রতি রাতে যারা আশেপাশে ডিউটিতে থাকেন তাদেরকেও ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এই লাইনগুলো ফুচকা বা খাদ্যদ্রব্যের দেখিয়ে মাসোহারা (মাসপ্রতি) আনতে হয়। এর ভেতর দিয়ে অনেকেই মাদক নিয়ে আসেন। তারা আরও জানায় সবাই মাদক নিয়ে আসে না। ২/৩ জন আছে যারা এগুলোর সাথে মাদক নিয়ে আসে। ফুচকা বা খাদ্যদ্রব্যের চেয়ে মাদকে লাভ অনেক বেশি হওয়ায় তারা এসব করছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আসাদুল ইসলাম মাদক আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৭২ বোতল ভারতীয় মদ আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে ১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কালাসাদেক বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জানান, সীমান্তে আমাদের নিয়মিত টহল রয়েছে। আমরা ১২৪৭ পিলারের এই দিকে টহল আরো জোরদার করবো। গোয়াইনঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাহিদুর রহমান জানান, চিকাডহর নারাইনপুরের দিকে কোন কিছু আসলে সেটা আমার জানা নাই। আর মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। আমরা এদিকে অভিযান পরিচালনা করবো।