গোলাপগঞ্জে পুনঃনির্বাচনের দাবি তিন পরাজিত প্রার্থীর
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২৪, ৭:৪১:৩৬ অপরাহ্ন
গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরাজিত দুই চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। পাশাপাশি নির্বাচনে সন্ত্রাসের কায়েম হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। আর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পুরো প্রশাসন নির্লজ্জভাবে এলিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছে বলেও অভিযোগ তাদের। এজন্য তারা পূনঃনির্বাচনের দাবি জানান। শনিবার দুপুরে নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ৮ মে গোলাপগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। আর এই প্রহসনের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আহসান ইকবাল। সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করেন মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমের কর্মী সমর্থকরা। উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বরায়া, হিলালপুর, হাজিপুর, মোল্লাগ্রাম ও কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আনারস ও ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দোয়াত-কলম মার্কায় জাল ভোট দেয়া হয়। এমনকি এসব কেন্দ্রে প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসাররাও জাল ভোট দিয়েছেন। মসজিদের ইমামকে দিয়েও দোয়াত-কলমের পক্ষে জাল ভোট দেয়ানো হয়েছে।
এলিমের গুন্ডাবাহিনী ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শেখপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়ে। তারা হামলা চালিয়ে আনারসের ৩ জন কর্মীকে মারাত্মক আহত করেছে, আহতদের অবস্থ আশংকাজনক বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, কায়স্থগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে এলিম চৌধুরীর সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিকেল ৩টার দিকে আনারস ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীকে অবরোধ করে রাখে। এসময় তারা ওই কেন্দ্রসহ আশপাশ কেন্দ্রগুলোতে টেবিল কাস্ট করেছে। সকাল থেকে বারবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করেও আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি।
তাছাড়া মীরগঞ্জ, শেখপুর, নিয়াগুলসহ আরও কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ফুরিয়ে গেছে বা আসতে দেরী হচ্ছে এমন হাস্যকর কারণ দেখিয়ে ভোট গ্রহণের গতি একেবারেই কম করে দেয়া হয়। এতে আমাদের অনেক ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন নি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধের পরিবর্তে শেখপুরে মানুষের বাড়িবাড়ি গিয়ে হামলা করেছে। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে আর কেন্দ্রমুখী হননি। এমন কি ভোট গণনায়ও ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের অনেক ভোট ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা কারণে বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই এলিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছেন। তারা তাকে নির্বাচিত করার নীলনক্সা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন। স্কুলের শিক্ষক মসিজদের ইমামকে দিয়েও জাল ভোট দিয়ে আমার জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এমন প্রহসনে গোলাপগঞ্জবাসী হতাশ। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ থানার ওসি, এসআই লুৎফুর এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লবিবুর রহমান নির্বাচনের নামে এমন প্রহসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিন প্রার্থীই গোলাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ৮ মের নির্বাচন বাতিল করে পুনঃ নির্বাচনের দাবি জানান। তারা এ ব্যাপারে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। বিজ্ঞপ্তি