প্রাথমিক স্কুলে চালু হচ্ছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০২৪, ৮:১৩:৩০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে আবারও প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এর অংশ হিসেবে প্রথমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হবে। তিন বছর ধরে প্রস্তুতির পর সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে।
বর্তমানে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ২০১০ সালে করা জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা আছে। ছয় বছর পর ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যদিও সরকার সেটি বাস্তবায়ন করেনি। বিষয়টি ৫ মে আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় নতুন করে আলোচনায় আসে। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈতনিক পাঠদান কার্যক্রম ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নি¤œমাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাব্যয় কমিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে কাজ করবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিন বছর প্রস্তুতি শেষে একপর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হবে।এরই মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনগুলোতে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি চালু করা যায়- এমন বিদ্যালয়ের তথ্য দিতে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।দেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি (কিন্ডারগার্টেনসহ) প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৩৯টি। এর মধ্যে সরকারি ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। অবশ্য জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে এর মধ্যে কয়েক বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে ৬৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি চালু আছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, সারা দেশে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি চালুর প্রয়োজন হবে না। যেগুলোতে সুবিধা আছে এবং যেখানে প্রয়োজন, সেখানে কেবল তা করা হবে। এখন আলাদা করে শিক্ষকের পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হবে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করার উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে তাঁদের চাওয়া, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ধাপে ধাপে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে সর্বজনীন শিক্ষা চালু করা হোক।
প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। এটি এসডিজি অনুযায়ী দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে সর্বজনীন শিক্ষার পথে এক ধাপ অগ্রগতি। তবে ব্যবস্থাপনাগত যে গলদ আছে, সেগুলোও দূর করতে হবে।’