এমপি আনার ভারতে খুন, মিলেনি লাশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মে ২০২৪, ৯:২৬:২৭ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতে খুন হয়েছেন। তবে তার লাশ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলেও জানান মন্ত্রী।
এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চপদস্থ একটি সূত্রে জানা গেছে এমপি আনার হত্যার কিলিং মিশনে ছিলেন ৫ জন। এ ঘটনায় একজন নারীও ছিলেন। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নারীসহ এরইমধ্যে ভারত ত্যাগ করেছে। সূত্র জানায়, আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার কিলিং মিশনে ছিলেন ৫ জন। তারা আনারকে হত্যা করে কেটে টুকরো টুকরো করে চারটি ট্রলি ব্যাগে করে লাশ বের করেন। এখন পর্যন্ত লাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। লাশের সন্ধানে মাঠে নেমেছে ভারতীয় পুলিশ। ওই স‚ত্র আরও জানায়, যারা কিলিং মিশনে ছিলেন তারা ভারত ত্যাগ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বুধবার সকালে নিজ বাসভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আনোয়ারুল আজিম আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এমপি আনার খুনের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বেশি কিছু বলা যাবে না। তবে এটা বলছি যে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে জানতে পেরেছি ভারতের কেউ জড়িত নন, আমাদের বাংলাদেশের মানুষ জড়িত।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যৌথভাবে (দুদেশের পুলিশ) কাজ করছি। তদন্তের স্বার্থে ইন্ডিয়ান পুলিশ আমাদের কাছে যে ধরনের সহযোগিতা চাইছে তা আমরা দিচ্ছি।’ এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরের নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মরদেহ পাওয়া যায়নি। বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এমপি আনার সাহেবের হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। কলকাতা পুলিশ যে ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে, সেখানে কোনো লাশ খুঁজে পায়নি। তবে হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। ডিবি আটক করেছে, কলকাতা পুলিশও দুজনকে আটক করেছে। কীভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কলকাতায় আমাদের উপহাইকমিশনের মাধ্যমে খোঁজ রাখছি। মিশন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।’
এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা একটা নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের কাজটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই করছি। কারণ তিনি একজন জনপ্রিয় পার্লামেন্ট মেম্বার। তিনবারের এমপি। এলাকার মানুষ ও জনগণ উনাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আসলে এ রকম একটি ঘটনায় আমরাও শোকে মুহ্যমান।’
ডিবি প্রধান বলেন, আমাদের তদন্ত কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এছাড়া ভারতের পুলিশও আমাদের সাথে কাজ করছে। আমাদের কাছে কয়েকজন আছে তাদের সাথে কথা বলছি এবং তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য আমরা এখন কাউকে বলবো না।
তিনি আরও বলেন, একজন এমপিকে যেভাবে বাংলাদেশের কিছু অপরাধীরা হত্যা করেছে তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি, বাকিদেরও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
চিকিৎসা ও বন্ধুর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে গত ১২ মে ভারত যান আনার। কলকাতার ব্যারাকপুর সংলগ্ন মণ্ডলপাড়ায় প‚র্বপরিচিত স্বর্ণ কারবারি গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তিনি। পরদিন ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফের সঙ্গে তার কথা হয়। ১৬ মে সকাল ৭টা ৪৬ মিনিটে সংসদ-সদস্য আনারের ফোন থেকে পিএসের নম্বরে সর্বশেষ কল আসে। কলটি ধরতে পারেননি পিএস। এক মিনিট পর পিএস তাকে কল করলে ওপাশ থেকে রিসিভ হয়নি। এরপর থেকে সংসদ-সদস্যের সঙ্গে আর যোগাযগাযোগ নেই।