অমিত হত্যা রহস্য উদঘাটন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২৪, ১০:০৮:১১ অপরাহ্ন
দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
স্টাফ রিপোর্টার: দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার অপারেটর অমিত দাস শিবু (৩৬) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডে জড়িত দুই আসামি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। নিহত অমিত সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার এলেংজুড়ি গ্রামের মৃত গৌর চাঁদ দাসের ছেলে। দুই সন্তানের জনক অমিত সপরিবারে নগরীর কানিশাইল এলাকায় বসবাস করতেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুমাইয়া আক্তার সুমি (২০) ও তাহমিদ আহমদ (২৬)। সুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার কালিকচ্ছের (ধরন্তি) মৃত জামাল ভূঁইয়ার মেয়ে এবং তাহমিদ সিলেট নগরের সাগর দিঘীরপাড়ের আব্দুস সালামের ছেলে। তারা নগরীর আরামবাগ এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা।
তাদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, অমিতের সাথে সুমাইয়ার ফোনে যোগাযোগ হয় এবং তারা হোয়াটসঅ্যাপে কয়েকবার কথা বলেছে। কথা বলার এক পর্যায়ে তারা একে অপরের সাথে দেখা করতে চায়। তবে অমিত বারবার ফোন করে ডিস্টার্ব করার কারণে সুমাইয়া তার উপর বিরক্ত ছিল। সেজন্য সুমাইয়া তার পাড়ার প্রভাবশালী বড়ভাই ফয়সালকে বিষয়টা জানায়। হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে গত ২৫ এপ্রিল দিবাগত রাতে অমিত দাস শিবুর সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেন সুমি। ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে মেসেজ দেন হোয়াটসঅ্যাপে। সেখানে আগে থেকেই সুমি এলাকার প্রভাবশালী ‘বড়ভাই’ ফয়ছলসহ কয়েকজনকে ঠিক করেন রাখেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহী ঈদগাহ মিনার গেটের নিচে ডেকে নেওয়া হয় অমিতকে। সেখানে আগে থেকে সুমাইয়া আক্তার সুমি অপেক্ষায় ছিলেন। অমিত সেখানে যেতেই সুমি তার মোটরসাইকেলে ওঠেন এবং ঘটনাস্থল হাজারীবাগে যান।
সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করা ফয়ছলসহ আরও চার-পাঁচজন অমিতকে হেলমেট দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর কথিত প্রেমিক তাহমিদকেও ডেকে আনেন সুমি। তিনিও এসে অমিতকে হত্যার মিশনে অংশ নেন। হত্যার পর তারা মরদেহ হুসনাবাদ এলাকায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে রাত আড়াইটার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে বলেন, সুমাইয়া আক্তার সুমি ও তাহমিদ আহমদকে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
এর আগে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নগরীর ঈদগাহ এলাকার হাজারীবাগ থেকে আব্দুল মুকিতের ছেলে ফয়ছল আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফয়ছলের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সুমি ও তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল রাত আড়াইটায় নগরের এয়ারপোর্ট থানার শাহী ঈদগাহ এলাকার হাজারীবাগ দলদলি চা বাগান সংলগ্ন মাঠ থেকে অমিত দাস শিবুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল নিহতের বড় ভাই অনুকূল দাস বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।