রাতেই আঘাত হানতে পারে রেমাল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মে ২০২৪, ৯:৪২:০৯ অপরাহ্ন
৭-১০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা *প্রস্তুত ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র *জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতির নির্দেশ
জালালাবাদ রিপোর্ট: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শনিবার রাতেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর আবহাওয়া অফিস। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’। আলিপুর আবহাওয়া অফিস বলছে, গভীর রাতে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মুকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র।
দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা। শনিবার মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পর্যাপ্ত খাবার ও সরঞ্জাম রয়েছে। অতিরিক্ত প্রয়োজন হলে যেন ঢাকা থেকে সরবরাহ করা যায়, সেই প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস, ভারতের আবহাওয়া অফিস, চীনের আবহাওয়া অফিস, জাপানের আবহাওয়া অফিস এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোববার ভোর থেকে এটা প্রাথমিক আঘাত হানতে পারে। এরপর সন্ধ্যা নাগাত মূলটা আঘাত হানবে। পূর্বাভাসে আমরা এরকমই বুঝতে পারছি এবং শনিবার রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে এটা ডেঞ্জার পয়েন্টে চলে যেতে পারে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিষ্কার বুঝতে পারছি ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রায় ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকা কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সাত থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর ভূমিধস হতে পারে। সব কিছু মাথায় রেখে সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে এই ঝড়টির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিতভাবে পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং আগাম কার্যাবলি (অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন) ও সাড়া প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমরা ভারতে অবস্থিত আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহওয়া কেন্দ্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস মডেল নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।