সরকারি বস্তায় ধান চাল সিন্ডিকেটের গুদামে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মে ২০২৪, ৮:২৫:১৪ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বোরো মৌসুমের ধান চাল সংগ্রহে চলছে অনিয়ম দুর্নীতি। সরকারি নিয়মমতে ধান চাল খাদ্য গুদামে কোন কৃষক নিয়ে আসলে তাকে দেওয়া হতো খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি বস্তা। কিন্তু এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে এখানে সিন্ডিকেটের গুদামে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সরকারি বস্তা। স্থানীয় কৃষকদের দিনের পর দিন বসিয়ে রেখে সিন্ডিকেটের ধান ঢুকছে গুদামে।
কৃষকদের অভিযোগ, কোম্পানীগঞ্জ খাদ্য গুদামের কর্তাদের সাথে থানা বাজারের আব্দুল আলী সিন্ডিকেট করেছেন। তাদের গোডাউনে হাজার হাজার সরকারি বস্তা আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বস্তা ভরে গাড়িতে করে খাদ্য গুদামে এসে ওজন ছাড়াই ভিতরে ঢুকানো হচ্ছে। কিন্তু ১৪/১৫ দিন বসেও প্রকৃত কৃষকরা বস্তা কিংবা সিরিয়াল পাচ্ছেন না। রোববার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে আব্দুল আলীর ৩টি গোডাউনের ধান চাল আটক করেছেন। একটিতে সরকারি বস্তায় ভরা চাল ও ২টিতে ধান ও সরকারি খালি বস্তা পাওয়া যায়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান চাল সরকারিভাবে ক্রয় করা হবে। এ বছর প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা দরে ৭৫২ মেট্রিক টন ও ৪৫ টাকা দরে ৯৫ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে ২২ টাকা দরে ধান ক্রয় করে তাদের কার্ডের মাধ্যমে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা গুদামে ৩২ টাকা দরে বিক্রি করছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি ধানে ১০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে কৃষকদের কাছ থেকে। ২৬ মে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ৩’শ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে।
এদিকে, রোববার দুপুরে উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায় ১০/১২ জন কৃষক ধান নিয়ে বসে আছেন। তাদের কেউ ১২ দিন কেউ ১৫ দিন থেকে রয়েছেন। তাদেরকে সরকারি বস্তা কিংবা সিরিয়াল দেওয়া হচ্ছে না। এসময় উপস্থিত কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ১৪ দিন হয় ধান নিয়ে আসছি গুদামে ঢুকানোর সিরিয়াল দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল তাদের সিন্ডিকেটের ধান আব্দুল আলী ট্রাক্টরে করে নিয়ে আসেন। সেগুলো কোন সিরিয়াল ছাড়া সাথে সাথে বাহির থেকে লেবার এনে গুদামে ঢুকানো হয়েছে।
সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করে আব্দুল আলী বলেন, আমি খাদ্য গুদামে কোন ধান দেই না। আমার ভাইয়েরা তাদের কার্ড দিয়ে ধান দেন। আমি বিভিন্ন মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সরকারি চাল ক্রয় করি। এগুলো আমার গোডাউনে রয়েছে। আমি কাগজপত্র ইউএনওকে দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, রোববার বিকালে ৩টি গোডাউন তল্লাশি করে সরকারি বস্তায় ধান চাল পাওয়া গেছে। এগুলো এখন আটক রয়েছে। আমাদের উপজেলার তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তারা আটক ধান চালের কাগজ দেখবে। উপযুক্ত কাগজপত্র না দেখাতে পারলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ জাকারিয়া মুস্তফা বলেন, গতকাল এ বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে। যদি কারো গাফিলতি পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।