সিলেটে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২৪, ১২:১০:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে বিপর্যস্ত সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ফলে অন্ধকারে আছেন বিভাগের ৫ লাখের বেশী বিদ্যুৎ গ্রাহক। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের অধিকাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ পেলেও এখনো অন্ধকারে পিডিবির ২ লক্ষাধিক গ্রাহক। রাত ১২টার মধ্যে অধিকাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে বুধবার লাগতে পারে বলে জানান তারা।
সিলেট দুদিনের ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাতে গাছপালা পড়ে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি ভেঙে পূরো বিভাগে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা। পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় সিলেটবাসীর। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে শুরু হয় হাহাকার। বিদেশে থাকার স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। চরম দুর্ভোগে পড়েন বিভাগের প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
বিদ্যুৎ না থাকায় মঙ্গলবার বন্ধ থাকে কয়েকটি প্রিন্ট পত্রিকার প্রকাশনা। নগর ও শহর এলাকায় দেখা দেয় তীব্র পানির সংকট। বিদ্যুৎ চালিত মটর বন্ধ থাকায় অনেককে নির্ভর করতে হয় বৃষ্টির পানির উপর। বিভিন্নস্থানে টব বালতি ড্রাম দিয়ে পানি সংগ্রহ করেন নাগরিকরা। বেলা ২ টার দিকে সিলেট নগরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হলেও গ্রামাঞ্চল এখনো অন্ধকারে নিমজ্জিত। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে কাজ করছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। এমনটা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার এবং খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সিলেট নগরসহ পুরো বিভাগজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবির সাড়ে তিন লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। তবে মঙ্গলবার দুপুরে বৃষ্টি থামার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট নগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায়ু স্বাভাবিক হলেও বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।
এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় টাওয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হয় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক। ফলে জরুরি প্রয়োজনেও মোবাইলেও কল করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের তার ও খুঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামতের চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে সিলেট বিভাগে সাড়ে ৭ লাখ গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে থেকে ৮০ ভাগ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এখনো ২০ ভাগ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। বুধবার দুপুরের মধ্যে শতভাগ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে আশ^স্ত করেন তিনি।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সিলেট জোনের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ নিয়াজ মোহাম্মদ দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে পল্লী বিদ্যুতের লাইন ও খুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। তবে কিছু দুর্গম ও গ্রামীন এলাকায় সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। বুধবারের মধ্যে সকল গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের ২৬ লাখ গ্রাহক রয়েছেন। এরমধ্যে কতসংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তার সঠিক হিসেব এই মুহুর্তে আমার কাছে নেই। তবে কয়েক লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন ছিলেন। ইতোমধ্যে অধিকাংশ গ্রাহককে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়েছে। বাকীদের সরবরাহ করতে কাজ চলছে।