নগরে সুরমার পানি
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২৪, ১২:১০:১৪ অপরাহ্ন
*ফায়ার সার্ভিস স্টেশনসহ নিচু এলাকা প্লাবিত* সুরমার সিলেট পয়েন্ট বিপদসীমার উপরে*
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটজুড়ে কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে। বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ইতিমধ্যে কয়েকটি উপজেলা পানিবন্দী। এখন নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর পানি নালানর্দমা দিয়ে প্রবেশ করছে সিলেট নগরে। এতে প্লাবিত হয়েছে নগরের নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন উপজেলার পর এবার ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, বিভিন্ন কাউন্সিলরদের দেওয়া তথ্যমতে নগরীতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ইতিমধ্যে ৪ হাজার পরিবার।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সিলেট নগরীর নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করে। শুক্রবার জামতলা, তালতলাস্থ সিলেটের ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় ও তোপখানা, বাগবাড়ী, সোবহানীঘাট, মাছিমপুর, উপশহরসহ বেশ কয়েকটি নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে দেখা যায়। কোন কোন এলাকায় হাঁটু পানি পর্যন্ত জমে থাকতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন সংশ্লিষ্টরা বলেন, বন্যার পানি ওঠার কারণে এ স্টেশন থেকে মেশিনারিজ ২৭ নং ওয়ার্ডের আলমপুর স্টেশনে নিয়ে রাখা হয়েছে। পানি আরও বাড়লে গাড়িগুলোসহ অন্যত্র নিয়ে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে কর্মীদের আপাতত সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ফায়ার সার্ভিসের মূল স্টেশন। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত শন্তু বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তালতলা স্টেশনটির পেছন দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈঠাখাল ছড়াটি সরাসরি সুরমা নদীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সুরমা নদীর পানি বাড়ায় ফায়ার স্টেশনে পানি ওঠে। সুরমার পানি কমলে পানি নেমে যাবে, আর পানি বাড়লে ফায়ার সার্ভিস ব্যারাকসহ তালতলা এলাকা ডুবে যায়।
সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, উজানের পানি নেমে আসায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ছড়ার পানি নদীতে যাওয়ার কথা সেখানে নদীর পানি ছড়া উপচে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে প্রায় ৬৬ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১০ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, সুরমা নদীতে পানি বেড়েছে। ফলে নগরের কাজিরবাজারসহ যেসব ড্রেন সুরমায় পড়েছে সেসব ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের বদলে উল্টো পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এ জন্য কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. মখলিছুর রহমান কামরান। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সুবহানীঘাট এলাকার হযরত ফুলতলী (রহ.) এর মাদ্রাসা ও তার আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছেন তিনি।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়র মখলিছুর রহমান কামরানের সাথে আলোচনা করে জরুরি নির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি সিসিক মেয়র জরুরি ত্রাণ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাথেও আলোচনা করেছেন।