শান্তিগঞ্জে হাওর-বিলের সুস্বাদু ফল ‘মাখনা’
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২৪, ৭:০৫:২৪ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে হাওর-বিল অঞ্চলের সুস্বাদু মাখনা ফলের কদর বাড়ছে। এই ফলের স্থানীয় নাম ফুকল। জেলার দেখার হাওর ও বিভিন্ন বিলের আনাচকানাচে মাখনা ফলের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ অঞ্চলে হাওর-বিলের বহুল পরিচিত ফল হিসেবে হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের কাছে মাখনা সুস্বাদু ফল হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। চৈত্র মাসের ২০-২৫ তারিখ থেকে হাওরের পানিতে এই ফল জন্ম নিতে শুরু করে। প্রতি বছরের বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাসেই মাখনা ফল পাওয়া যায় হাওর-বিলে। হাওর-বিলের গভীর পানির মধ্যে থাকা এসব ফল তুলে এনে পাগলা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন মাখনা ব্যবসায়ীরা। আকারভেদে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি ফল বিক্রি করা হয়। দেখতে কুৎসিত হলেও এই ফলটি অনেক উপকারী। মাখনা ফলের ওপর থেকে মোটা আবরণ ফেলে দেওয়ার পরই দেখা মেলে বাদামের দানার মতো বিন্দু বিন্দু ফলের অস্তিত্ব।
মাখনা ফলের পাতা ও ফুলে রয়েছে দারুণ রঙের বৈচিত্র্য। তবে পাতাগুলো ঢাল আকৃতির ও কোঁচকানো। পাতাটির ওপরিভাগ ঘন সবুজ, নিচের অংশ কালচে ও নীলাভ বেগুনি রঙের। পাতার প্রস্থ প্রায় এক মিটার ওপরে। ফুলের ভেতরের অংশ উজ্জ্বল লাল এবং বাইরের অংশ চকচকে সবুজ রঙের। ফুলটি আড়াই থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। মাখনা ফল কাঁটাযুক্ত এবং এ ফলের ব্যাস প্রায় ৫-১০ সেন্টিমিটার।
স্থানীয়রা বলছেন, এই ফলটি খুবই উপকারী। প্রাকৃতিক এই ফলে নেই কোনো ভেজাল। তবে এতে রয়েছে নানান গুণাগুণ। এই ফল বছরে একবার দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাওর-বিলে প্রতি বছর এই ফল জন্মায়। স্থানীয় মানুষ ফলটিকে শখের বসে খাচ্ছেন। পাশাপাশি বাজার থেকে কিনে নিয়ে বিদেশে আত্মীয়স্বজনদের কাছেও অনেকেই পাঠিয়ে থাকেন। তবে এই ফল রাজধানী ঢাকাতেও পরিচিতি লাভ করেছে।
পাগলা বাজারের মাখনা ফলবিক্রেতা নাসির মিয়া ও আছির মিয়া বলেন, হাওর থেকে পাইকারি দরে কিনে পাগলা বাজারে এসব ফল বিক্রি করি। বাজারে আনার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন ভিড় করেন এই ফল কিনতে। বিক্রি ভালো হচ্ছে এই ফল। এর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমদ বলেন, বিভিন্ন হাওর-বিলে প্রতি বছর মাখনা ফল জন্ম নেয়। স্থানীয় মানুষ ফলটিকে শখের বসে খাচ্ছেন। নির্দেশনা পেলে এই ফলের জাত সম্প্রসারণে কাজ করা হবে।