ফিলিস্তিন নীতির প্রতিবাদে আরো ২ মার্কিন কর্মকর্তার পদত্যাগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২৪, ৯:১৪:০৩ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হোয়াইট হাউসের ফিলিস্তিন নীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পদত্যাগ করেছেন আরও দুই মার্কিন কর্মকর্তা। তারা বলছেন, গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরাইল স্পষ্টতই বাধার সৃষ্টি করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে সত্য বলছে না। পদত্যাগী দুই কর্মকর্তার একজন ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ঠিকাদার আলেকজান্ডার স্মিথ। অপরজন জনসংখ্যা শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তা স্টেসি গিলবার্ট। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, কংগ্রেসে জমা দেওয়া প্রশাসনিক প্রতিবেদন তাতে পদত্যাগ করতে প্ররোচিত করেছে। এদিকে গণহত্যার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে চাকরি হারিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন মুসলিম নার্স। খবর রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ানের।
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ঠিকাদার আলেকজান্ডার স্মিথ বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের মধ্যে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর ওপর একটি প্রেজেন্টেশন তৈরির পর তাকে পদত্যাগ এবং বরখাস্তের মধ্যে একটি পছন্দ দেওয়া হয়েছিল। তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বেছে নেন। লিঙ্গ, মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য এবং পুষ্টিবিষয়ক এই সিনিয়র উপদেষ্টা ইউএসএআইডিতে চার বছর কাজ করার পর গত সোমবার পদত্যাগ করেন। সংস্থার প্রধান সামান্থা পাওয়ারের কাছে দেওয়া পদত্যাগপত্রে স্মিথ বিভিন্ন দেশে ইউএসএআইডির কর্মপদ্ধতির অসঙ্গতি এবং মানবিক সংকট নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
লিখেছেন, ‘আমি এমন পরিবেশে কাজ করতে পারি না; যেখানে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পূর্ণরূপে মানুষ হিসেবে স্বীকার করা হয় না, কিংবা যেখানে লিঙ্গ এবং মানবাধিকার নীতিগুলো কেবল কিছু মানুষের জন্য প্রযোজ্য, কিন্তু অন্যদের জন্য নয়।’ এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে স্টেসি গিলবার্টের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্টেসি গিলবার্ট মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব পপুলেশন, রিফিউজিস অ্যান্ড মাইগ্রেশনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। তিনি কংগ্রেসে জমা দেওয়া বাইডেন প্রশাসনের ওই রিপোর্টে কাজ করা একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। পদত্যাগের পর গিলবার্ট একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কোনটা সঠিক এবং কোনটা ভুল তা স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় এবং সেই প্রতিবেদনে যা আছে তা ভুল।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে নগ্নভাবে ইসরাইলকে অস্ত্র ও মতাদর্শিক সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন।নিউইয়র্কে চাকরি খোয়ালেন মুসলিম নার্স : গাজা যুদ্ধে ইসরাইল ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে, এমন মন্তব্য করে চাকরি খুইয়েছেন নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে কর্মরত একজন ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মুসলিম নার্স। রয়টার্স জানিয়েছে, গর্ভাবস্থা ও প্রসবের সময় সন্তান হারানো শোকার্ত মায়েদের নিয়ে কাজ করেন হাসেন জাবের নামের এই নারী নার্স। সেই কাজের জন্য স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি গাজার ‘গণহত্যা’ নিয়ে কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিভাজনমূলক’ এই বিষয়ে কথা না বলতে লেবার এবং ডেলিভারি নার্স জাবেরকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। নার্স হাসেন জাবের এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন, গত ৭ মে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
তখন তিনি বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপরই তাকে বরখাস্তের চিঠি ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জাবের তার বক্তব্যের একটি অংশে গাজা যুদ্ধে সন্তান হারানো শোকার্ত মায়েদের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, এই পুরস্কার তার কাছে ‘খুবই ব্যক্তিগত’ গুরুত্ব বহন করে। ‘গাজায় চলমান গণহত্যার মধ্যে আমার দেশের নারী যে অকল্পনীয় ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা আমাকে প্রচ- কষ্ট দেয়,’ বলেন তিনি।