চায়ের কাপে ঝড় বাড়ছে, উৎপাদন বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুন ২০২৪, ৮:২৭:১৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন গ্রামগঞ্জের মানুষ অনেক বেশি তথ্য পান। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও রাত ১১টা-১২টা পর্যন্ত সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও বিশ্ব পরিস্থিতির আলোচনায় চায়ের কাপে ঝড় ওঠে।
তিনি বলেন, চায়ের কাপে এ ঝড় দিন দিন বাড়ছে কাজেই চায়ের চাহিদাও বাড়ছে। সেজন্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আর এটা করার জন্য যা যা করার দরকার অবশ্যই আমরা তা করব। আপনাদের সবরকম সহযোগিতা করব সেটাই আমাদের লক্ষ্য। মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্বব্যাপী চা-এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চা পাতা বাল্কে বিক্রি না করে এর মূল্য সংযোজন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মানুষের রুচি এখন বদলে গেছে। এখন বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যায়। সুগন্ধি চা তৈরি করুন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাদের চায়ের চাহিদা এখন অনেক বেশি। চা উৎপাদনের পাশাপাশি এদিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের রুচির পরিবর্তন ঘটায় এখন বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে হারবাল টি, মসলা টি পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্য ‘অ্যারোমা টি’ উৎপাদন করা প্রয়োজন। কারণ, বিভিন্ন অ্যারোমা চায়ের কদর অনেক বেশি। তাছাড়া তুলসি, আদা, লেবু, তেজপাতা, এলাচ, লং, দারুচিনি প্রভৃতির সাহায্যে আমরা যে চা বানাই সে চা-ও প্যাকেটজাত করা যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা চা মালিক এবং ব্যবসায়ী রয়েছেন তাদেরকে বিশেষ করে মালিকদের বলব আপনারা ভ্যালু অ্যাড করেন। বাল্কে চা বিক্রির পরিবর্তে যদি ভ্যালু অ্যাড করেন তাহলে আপনারা ভালো দাম পাবেন। প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে পারবেন এবং বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাট পাতা থেকে চা তৈরিতে গবেষণা চলছে এবং সীমিত আকারে উৎপাদন হচ্ছে। এটি নিয়ে আরো গবেষণা করে এর উৎকর্ষ সাধন প্রয়োজন।
সরকার প্রধান বলেন, চা-কে বহুমুখী করা এবং অ্যারোমা টি তৈরি করা, যেটার চাহিদা বিদেশে এখন অনেক বেশি। তাই সেদিকেই আমাদের নজর দেয়া দরকার। চা পাতা শুধু বাল্কে বিক্রি না করে ভ্যালু অ্যাডেড করে সেটা আমরা রফতানি করব। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি উৎপাদকদেরও ভালো উপার্জন হবে।
তিনি শ্রমিকদের প্রতি আরো যত্নবান হওয়ার এবং তাদের দিকে বিশেষভাবে নজর দেয়াসহ তাদের সন্তান-সন্ততিদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য চা বাগানের স্কুলগুলোর উন্নয়নে মালিকপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা বাগানে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই রয়েছেন। কাজেই তাদের জীবন মান উন্নত করা, আর্থিক দিক দেখা, ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত দেখা কিন্তু মালিকদের দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, অভিভাবকের মতো আপনারা সেটা দেখবেন, আমরা সেটিই চাই। পাশাপাশি চা শ্রমিকরা আর ভাসমান থাকবে না, সে বিষয়টিও দেখার দায়িত্ব আমাদের। শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও শ্রমিকদের মাঝে ৮টি ক্যাটাগরিতে ‘জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৪’ প্রদান করেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন।