নগরের প্লাবিত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুন ২০২৪, ৯:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরের অধিকাংশ এলাকায় পানি নামলেও নিচু এলাকাগুলোতে এখনো পানি আটকে আছে। যেসব এলাকায় পানি আটকে আছে সেখানে পানি কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। ময়লা-আবর্জনা ভাসছে।
বুধবার বিকেলে দেখা গেছে, সোবহানীঘাট, উপশহর ই ও সি ব্লকের বিভিন্ন গলি, জামতলা, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, কাজিরবাবাজার, তেররতন এলাকায় পানি আটকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ঘরের মেঝে কাদাপানিতে একাকার। সেসব পরিষ্কার করে কেউ কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন। আর যাদের বাসায় এখনো পানি, তারা চরম দুর্ভোগে জীবন কাটাচ্ছেন।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সোবহানিঘাটে হাঁটুসমান পানি মাড়িয়ে হেঁটে আসতে দেখা গেল অসংখ্য মানুষকে। একই অবস্থা উপশহের বিভিন্ন গলিতে। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, তাদের সিংহভাগ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। অনেকে নিরাপদে সরে গেছেন। যারা এখনো কষ্ট ও দুর্ভোগ সহ্য করে আছেন, তাদের ঘরে এখনো পানি। জমে থাকা পানিতে নানা বর্জ্য ভাসছে, সারাক্ষণ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
উপশহরের সি-ব্লকের ৩৭ নম্বর রোডে কথা হয় এক বাসিন্দা বললেন, একটি ভবনের নিচতলায় পরিবার নিয়ে তিনি ভাড়া থাকেন। ২০২২ সালের বন্যায় বাসায় কোমরপানি হয়েছিল। এবার হাঁটুপানি ছিল। এখন পানি অনেকটা সরে গেলেও পুরোপুরি নামেনি। রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে। বাইরের বর্জ্য পানিতে ভেসে ঘরে ঢুকেছে। আছে পোকামাকড়েরও উপদ্রব। খুব বাজে একটা পরিস্থিতিতে সময় কাটছে।
তালতলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটিতে গতকালও পানি জমে ছিলো। পানিতে দাঁড়িয়েই কর্তব্যরত ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন করছেন। আশপাশের দোকান, সিনেমা হল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেও পানি। কাজিরবাজারে পশুর সবচেয়ে বড় হাট তলিয়ে আছে। এ অবস্থায় কোরবানির পশুর হাট এবার এখানে বসতে পারবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কা আছে। বৃষ্টি বাড়লে আরো খারাপ হতে পারে।
ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলছেন, সুরমা নদীর কিনারা ঘেঁষে থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সুরমা নদী পানিতে ভরপুর থাকায় বৃষ্টির পানি নগরের ছড়া ও খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সুরমা নদীতে গিয়ে মিশতে পারছে না। এতে বৃষ্টি হলেই এখন জলমগ্ন হয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকা। পানিবন্দী থাকায় নগরবাসীও স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছেন না। পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে গত ২৯ মে মধ্যরাত থেকে সিলেটের ১০টি উপজেলা ও নগরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।