ঢাকায় পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০২৪, ৯:১২:৫৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোন এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের পুলিশ বক্সের সামনে শনিবার রাতে মনিরুল হক নামে এক কনস্টেবলকে গুলি করে হত্যা করেছেন সহকর্মী কাওছার আলী। এদিকেমনিরুল হককে হত্যার ঘটনায় কাওছার আলীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে কাওছার আলীকে তোলা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই মো. আব্দুল মান্নাফ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদ শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে কাওছারের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এর আগে, কনস্টেবল মনিরুল হককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার ভাই কনস্টেবল মাহাবুবুল হক গুলশান থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শনিবার কনস্টেবল মনিরুল হক (২৭) তার সহকর্মী কাওছার আলীর সঙ্গে গুলশান থানাধীন বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে ফিলিস্তিন দূতাবাসের পুলিশ বক্সে রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সশস্ত্র অবস্থায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তামূলক ডিউটিতে ছিলেন। ডিউটি পালনের সময় রাত পৌনে ১২টার দিকে কাওছারের সঙ্গে ডিউটি করা নিয়ে মনিরুলের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাওছার উত্তেজিত হয়ে মনিরুলকে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। গুলিতে মনিরুল ফিলিস্তিন দূতাবাসের পুলিশ বক্সের সামনে উপুড় হয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
তবে কী নিয়ে তর্ক ও কী কারণে কনস্টেবল কাউসার উত্তেজিত ছিলেন সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে পারেনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তদন্ত করে সেটি বের করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। রোববার দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপ্স) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, দুই পুলিশ সদস্যের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। কাউসারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি কিন্তু বিরোধের কোনো তথ্য পাইনি। পাশাপাশি অভিযুক্ত কাউসারের গত এক দুই মাসের ডিউটির রেকর্ড দেখেছি। রেকর্ডে দেখা গেছে কাউসার যথাযথভাবে ডিউটি করেছেন। গুলি করার আগে তাদের মধ্যে কী বিষয়ে তর্ক হয়েছিল এখনো তা নিশ্চিত হতে পারেনি আমরা। সেটি পরে তদন্তে জানা যাবে।
ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে অভিযুক্ত কনস্টেবল কাউসার আহমেদ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। গুলি করেই তিনি হতভম্ব। এ কারণে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিল যে, ‘এটা কীভাবে হয়ে গেল। আমি জানি না।’
‘অর্থাৎ নিজের সহকর্মীর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরে তিনি মানসিকভাবে নার্ভাস থাকেন। যে কারণে ঘটনা ঘটার পরও অস্ত্র রেখে কনস্টেবল কাউসার সেখানে হাঁটাহাঁটি করছিলেন। কারণ তিনি হয়ত স্ট্রেস নিতে পারছিলেন না। ঘটনার পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন হয়ত কত বড় অন্যায় ও অমানবিক কাজ করে ফেলেছেন। এক-দুদিন গেলে বোঝা যাবে গুলি করার কারণ।’ অতিরিক্ত ডিউটির কারণে কনস্টেবল কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. খ. মহিদ বলেন, না। ডিউটির কারণে কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। আর এখন কোথাও ডিউটির অতিরিক্ত চাপ নেই। স্বাভাবিকভাবেই ডিউটি করছেন সবাই।
সামগ্রিকভাবে পুলিশ সদস্যদের কাউন্সেলিংয়ের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাউন্সেলিংয়ের সিস্টেম নেই। তবে আমাদের নিয়মিত ব্রিফিংগুলোতে কী করা যাবে, কী করা যাবে না সে সম্পর্কে বলা হয়। এটাও এক ধরনের কাউন্সেলিং।