ওসমানীনগরে ৮৬ লাখ টাকার ব্রিজের গার্ডার দেবে গেছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুন ২০২৪, ৮:৩২:০৫ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর প্রতিনিধি: ওসমানীনগরে ত্রুটিপূর্ণ সাটারিং ও মানহীন কাজে ব্রিজের গার্ডার প্রায় ৬ ইঞ্চি নিচের দিকে দেবে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ব্রিজের ছাদ ঢালাই দেয়া হলে ভবিষ্যতে ব্রিজের মধ্যখানে ফাটল দেখা দেবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সম্প্রতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজের ছাদ ঢালাইয়ের গার্ডার নির্মাণ করলে গার্ডারের মধ্যস্থান প্রায় ৬ ইঞ্চি দেবে যায়। বিষয়টি এলাকার লোকজন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানালে তিনি দেখবেন বলে জানান।
জানা যায়, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের মুতিয়ারগাঁও, হলিমপুর, ভাগলপুর, কলারাইসহ এলাকার অন্যান্য ৭/৮টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের স্বার্থে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্ষুদির খালের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। গত বছরের জানুয়ারি মাসে কাজটি পায় নিজাম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। নিজাম এন্টারপ্রাইজ কাজটি নিজে না করে সাব কন্ট্রাক্ট হিসেবে ব্রিজের কাজটি বিক্রি করে দেন ইমরান মিন্টু নামের এক ঠিকাদারের কাছে। ইমরান মিন্টু কাজ পাওয়ার পর উক্ত স্থানের পুরোনো ব্রিজ ভেঙে মালামাল বিক্রি করে দেয়ার পর নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য একপাশের বেইজের সামান্য অংশের কাজ করে প্রায় এক বছর ফেলে রাখেন। গত এপ্রিল মাসে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় ব্রিজ নির্মাণের বিলম্বের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও আলোচনা করেন। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আবার ঠিকাদার ইমরান মিন্টু ব্রিজের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে মানহীন কাজ ও ত্রুটিপূর্ণ সাটারিং হওয়ায় ব্রিজের গার্ডার নিচ দিকে প্রায় ৬ ইঞ্চি দেবে গেলে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের জানান।
স্থানীয় মুতিয়ারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা অলিদ মিয়া (৪৫), আরিফ উল্লাহ (৬৫), মনজুর মিয়া (৩০) ও নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার মানুষের চলাচলের জন্য সরকার একটি ব্রিজ বরাদ্দ করেন। কিন্তু ঠিকাদার অতি নি¤œমানের কাজ করছেন। আমরা এলাকার পক্ষ থেকে বারবার তাকে বলেও কাজের মান উন্নত করাতে পারছিনা। পানির মধ্যে সাটারিং করে গার্ডার স্থাপন করায় গার্ডার প্রায় ৬ ইঞ্চি নিচ দিয়ে দেবে গেছে। এখন ঠিকাদার চাচ্ছেন এই ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্বল সাটারিং দিয়েই ঢালাই সম্পন্ন করতে। এভাবে ঢালাই কাজ সম্পন্ন হলে ব্রিজের ছাদ ফেটে যাওয়ার আশংকা করছি। সাব ঠিকাদার ইমরান মিন্টু বলেন, কিভাবে দেবে গেছে এটা ইঞ্জিনিয়ার বুঝবে। আমি কিছু বলতে পরবো না।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সুহেল রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখবো কি হয়েছে। সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ বুলবুল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে বক্তব্য দেবো। না দেখে কিছু বলতে পারবো না। এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।