ঢাকা-দিল্লি ১০ সমঝোতা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৪, ৯:৪৪:১৭ অপরাহ্ন
মোদির সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
জালালাবাদ রিপোর্ট: দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে ঢাকা ও নয়াদিল্লি। এসব স্মারকের মধ্যে সাতটিই নতুন। এছাড়া তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে।শনিবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর এসব সমঝোতা স্মারক সই হয় বলে বাসস জানিয়েছে। দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হয়।
দুই নেতার বৈঠকের আলোচনায় মূলত দুই দেশের মধ্যে সংযোগ, জ্বালানি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, সমুদ্র সম্পদ, বাণিজ্য, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অংশীদারত্বের বিষয় স্থান পায়। পরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হয়।
এই বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুনীল অর্থনীতি ও সমুদ্র সহযোগিতা, রেল, সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহযোগিতা, মৎস্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ ১০টি ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
নতুন সাতটির মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরভিত্তিক সুনীল অর্থনীতি ও সমুদ্র সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা চুক্তি হয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে।
সমুদ্রবিজ্ঞান এবং এ ক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে আরেকটি সমঝোতা চুক্তি হয় বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইন্সটিটিউট (বিওআরআই) এবং কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) ইন্ডিয়ার মধ্যে। ভারত-বাংলাদেশ রেলসংযোগ বিষয়ক নতুন আরেকটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে।
টেকসই ভবিষ্যতের জন্য দুই দেশের মধ্যে ডিজিটাল ও সবুজ অংশীদারত্ব বিষয়ক নতুন দুটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। যৌথ কৃত্রিম উপগ্রহ প্রকল্পের জন্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার (ইন-স্পেস), ডিপার্টমেন্ট অব স্পেস, ভারতের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নতুন সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের।
ডিএসসিসি, ওয়েলিংটন এবং ডিএসসিএসসি, মিরপুরের মধ্যে সামরিক শিক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতার জন্য নতুন একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়। এছাড়া মৎস্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতার তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন হয়েছে এবার।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশি, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সৃষ্ট সম্পর্ককে বাংলাদেশ সবসময়ই বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
শনিবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর যৌথ এক সংবাদ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও যোগাযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি আরও বলেন, উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের দিকনির্দেশনা দিতে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট’ সমর্থন করেছে। বাংলাদেশ ও ভারত ‘ডিজিটাল পার্টনারশিপ’ ও ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্বের’ জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে সম্মত হয়েছে।
এর আগে সকালে দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চৌকস একটি দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।