প্রাণ ফিরেনি নগরে
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৪, ১০:০২:৩৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদুল আজহার পর শনিবার ছিল সপ্তাহের প্রথম দিন। আগের কয়েকদিন বৃষ্টি বাদলায় মুখর থাকলেও শনিবার ছিল সিলেট আবহাওয়া রৌদ্রজ¦ল। ঝলমলে এই দিনেও সিলেট ছিল অনেকটা সুনসান। ঈদের পর চারদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও প্রাণ ফিরেনি নগরে। মূলত সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির জন্য এমন বলে মনে করছেন অনেকে। তারা বলেন অন্য সময় ঈদের দুই তিনদিন পরই নগরী ব্যস্ত হয়ে যায়, সাধারণত মাঝের শুক্রবারের পরই তা দেখা যায়। তবে এবার বন্যার জন্য তা হয়নি। কারণ অনেকে গ্রামের বাড়ি গিয়ে বন্যার জন্য ফিরতে পারেন নি। কারো বাসাবাড়ি পানিবন্দী। নগরে যারা থাকেন তারাও অনেকটা বন্যা ও পানিবন্দীর শিকার। তাই এটা কাটিয়ে নগরে প্রাণ ফিরতে আরও সময় লাগবে।
এদিকে বৃষ্টি না হওয়া এবং রোদ থাকায় তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘির পারসহ কয়েকটি এলাকার রাস্তা থেকে পানি সরে গেছে। এ কদিন এসব রাস্তা জলমগ্ন ছিল। রাস্তা পানির নিচে থাকায় যানবাহন চলাচল ছিল সীমিত। ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিকশা বিকল্প পথে চলাচল করছিল। তবে শনিবার এর বিকল্প চিত্র হলেও অধিকাংশ দোকানপাঠ ছিল বন্ধ। যেগুলো খুলেছিল সেগুলোও বিকেলের পর ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেন লোকজন। একই অবস্থা নগরীর অন্যান্য এলাকার দোকনপাঠ ও রাস্তাঘাটের।
সকালের দিকে বেলা বাড়ার পর আকাশ উজ্জ্বল হতে শুরু করে। রাস্তাঘাটে বাড়ে লোকজনে আনাগোনা। তবে রাস্তায় যানবাহন ছিল অনেকটা ছুটির দিনের মতো। দুপুরের পর দু একটি রিকশা ও সিএনজি ছাড়া খুব একটা যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও ছিল না অন্য ঈদ মৌসুমের মতো দর্শনার্থীর চাপ। বেশিরভাগ চা স্টাল ও রেস্টুরেন্ট ছিল বন্ধ। বড়ো রেস্টুরেন্ট ছাড়া ছোটোখাটো যে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট খুলছে সবগুলোতে ছিল পণ্যের পসরা সীমিত, কারিগর কম, লোকজন কম। নগরীর জল্লাপার পয়েন্টের থ্রি সিস্টার রেস্টুরেন্টের কর্ণধার জানান তার রেস্টুরেন্টে সকালে পরোটা-সবজি ও খিচুরি, দুপুরে সিঙারা-খিচুরি এবং বিকেলে ডালপুরি, ছোলাভুনা, পিয়াজুর আয়োজন থাকে। তবে এখন শুধু সকালে পরোটা-সবজি আর বিকেলে ডালপুরি ও ছোলা বিক্রি করছেন। ভাইবোন ¯œ্যাকবারের কর্ণধার খোকন মিয়া বলেন তার দোকানে এখন কেবল চা বিক্রি করছেন। অন্য সময় সকাল থেতে চায়ের পাশাপাশি খিচুরি, পেয়াজু, আলুচপ, সিঙারা, সমুচা, ডালপুরি, কিমাপুরি, মোগলাই, জিলিপি বিক্রির ধুম থাকে। তবে ঈদের পর কারিগর না আসায় শুধু চা বিক্রি করেন। তিনি বলেন ঈদের ছুটিতে কারিগর গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় তিনি ফিরতে পারেন নি। তাছাড়া আশপাশের অনেক দোকানদারের বাড়িতে পানি উঠেছে। তাই তারাও দোকান খুলেন নি। দোকান না খুললে তার দোকানে কাস্টমার কম থাকে। এজন্য তিনি শুধু চা ও অল্প খিচুরি ছাড়া আর কিছু বিক্রি করছেন না।
নগরীর পানসী রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে সিএনজিতে দর্শনার্থীদের নিয়ে যান চালক আফরোজ মিয়া। তিনি জানান এবারের ঈদ পানিতে খেয়ে ফেলেছে। তিনি মূলত কোম্পানীগঞ্জ রুটে রিজার্ভ সিএনজি চালান। কিন্তু বন্যায় সব পর্যটন স্পট বন্ধ থাকায় দর্শনার্থী নেই তাই তাদের আয়ও বন্ধ।





