বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও সুরমা ও কুশিয়ারা’র পানি বিপদসীমার উপরে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৪, ৭:২৫:৪৫ অপরাহ্ন
খুলে দেওয়া হলো পর্যটন কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। বাসাবাড়ি থেকে পানি নামছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া মানুষজন বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টে পানি এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমে যাওয়ায় শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। রোববার জাফলং, রাতারগুল ও সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়।
সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত সিলেটে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন। এরমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন ১৯ হাজার ৭৩৮ জন। তবে পানি কমায় গত ২৪ ঘন্টায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন প্রায় ২ হাজার লোক। তবে পানি কমলেও বন্যা আক্রান্তদের দুর্ভোগ কমেনি। বরং পানি নামার সাথেসাথে স্পষ্ট হয়ে উঠছে বন্যার ক্ষত। বন্যায়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সড়কের। জেলার বেশিরভাগ সড়কই ভেঙে গেছে। ভেঙে গেছে জলমগ্ন হওয়া কাচা বাড়িঘর। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তবে এখনও পানি পুরোপুরি না নামায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করতে পারেনি সংশ্লিস্ট বিভাগগুলো।
পাউবো সিলেট সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেটে নদ-নদীর পানি কমছে। রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, আগে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে নদ-নদীর পানি বেড়েছিল। বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুই দিন ধরে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় পানি নামতে শুরু করেছে। তবে হাওর ও নদ-নদীগুলোতে পানি বেশি থাকায় পানি নামতে কিছুটা সময় লাগছে।
জাফলং, রাতারগুল ও সাদাপাথর খুলে দেওয়া হলো : পর্যটক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকা সাপেক্ষে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও রাতারগুল এবং কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথার পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে।
রোববার উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরআগে গত শুক্র ও শনিবার দুই দফা গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভ‚মি)সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম পর্যটনকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে। তবে জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সকল বোট মালিক, নৌ চালক-মাঝিদেরকে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনাহ সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না। ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, রোববার দুপুর থেকে শর্তসাপেক্ষে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝিসহ সকলকে অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।





