বড়লেখায় গো-খাদ্যের চরম সংকট
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০২৪, ৬:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যা দুর্গতরা। কারণ বন্যায় ডুবে গেছে চারণ ভূমি। এতে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্যের অভাবে অনেক গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় অনেকে কম দামে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অবলা এই প্রাণিগুলোর জন্য সরকারিভাবে কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন সুজানগর, তালিমপুর, বর্ণি ও দাসেরবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। অনেক বাড়িঘর পানির নিচে রয়েছে। ঘরে পানি ওঠায় অনেক মানুষ গবাদিপশুগুলো নিয়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের মাঠে গবাদিপশু বেঁধে রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের ওপর বেঁধে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ গবাদিপশুকে কচুরিপানা খাওয়াচ্ছেন। কেউ কিছু খাওয়াতে না পেরে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন।
টেকাহালি গ্রামের আব্দুল হান্নান বলেন, বন্যায় সব জায়গা ডুবে গেছে। গরুর জন্য কোনো ঘাসপাতা পাচ্ছি না। বড় সমস্যায় পড়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের খাদ্য দেওয়া হয়েছে। গরুগুলোর জন্য কেউই কিছু দেয়নি।
আজিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ভোলারকান্দি গ্রামের মাসুক মিয়া বলেন, বাড়িঘরের অবস্থা খারাপ। সব ডুবে গেছে। আমরা দ্রুত গরু-বাছুরগুলো নিয়ে সাঁতরে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছি। গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াতে পারছি না। কখনও কিছু পেলে তাদের খাওয়াচ্ছি। কারণ বন্যায় সব এলাকা ডুবে গেছে। বড় অসহায় অবস্থায় আছি।
একই আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মুসলিম আলী বলেন, কোথাও ঘাস মিলছে না। বন্যায় সব ডুবে গেছে। আমরা নিজেদের থাকা-খাওয়া কোনোমতে জুটছে। কিন্তু গরুগুলোর কোনো খাদ্য পাচ্ছি না। কচুরিপানা যা পাচ্ছি খাওয়াচ্ছি।হামিদা খাতুন নামে এক নারী বলেন, তার ঘরে পানি ঢুকেছে। তাই খাটের ওপর ৩-৪টা ছাগল রেখেছিলেন। কিন্তু এগুলো রাতে পানিতে পড়ে মারা গেছে। পরে বাধ্য হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, গবাদিপশুর জন্য আমরা চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালাচ্ছি। গো-খাদ্যের চাহিদা দেওয়ায় কিছু খাদ্য পাওয়া গেছে। তালিকা তৈরীর পর তা বিতরণ করা হবে।
ইউএনও নাজরাতুন নাঈম বলেন, বন্যার্ত এলাকার গবাদিপশুর জন্য আমরা খাদ্য পেয়েছি। দ্রুত গবাদিপশুর তালিকা সংগ্রহ করে খাদ্যগুলো বিতরণ করা হবে।