ওসমানীনগরে বিএনপি-শিবির নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ, ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৪, ৮:৩১:৪৪ অপরাহ্ন

ওসমানীনগর প্রতিনিধি: সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর বাজার চৌমুহনী এলাকায় বিএনপি ও শিবির কর্মীদের অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৪ জুন ২০২৪) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অনুমতি ছাড়া একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা ঢাকাুসিলেট মহাসড়কের দয়ামীর বাজার এলাকায় পাকা সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানার এসআই মোঃ মিজানুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সমাবেশ ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে এসআই মিজানুর রহমান ডান পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে, এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শর্টগান থেকে দুই রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করে এবং বিস্ফোরিত ককটেলের কিছু অংশ ও একটি অবিস্ফোরিত ককটেল জব্দ করে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ নং আসামী জুয়েল আহমদ ও ৯ নং আসামী জাহিদুল ইসলাম প্রবাসে অবস্থান করে দেশীয় কর্মীদের আন্দোলনে নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাদের পরামর্শে স্থানীয় বিএনপি ও শিবির কর্মীরা এই অবৈধ সমাবেশ আয়োজন করে।
এ ঘটনায় ওসমানীনগর থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ১৪ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩/৩৪১/৩৫৩/১৮৬/ ৩৩২/৩৪ ধারাসহ বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯০৮-এর ৩/৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামীরা হলেন- ১। সুলতান আহমদ (২৪) (সাধারণ সম্পাদক, ওসমানীনগর থানা ছাত্রশিবির), পিতা-অমর আলী, সাকিন-ইছামতি, ২। শাহিন আহমদ (৩৮), (সাধারণ সম্পাদক, দয়ামীর ইউনিয়ন বিএনপি), পিতা-আব্দুল কাদির, সাকিন-রাউতখাই, উছমানপুর, ৩। রানা আহমদ (২৮), (সাংগঠনিক সম্পাদক, উছমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল), পিতা-মোঃ হোসেন আহমদ, সাকিন-দৌলতপুর, ৪। জুয়েল আহমদ (২৪), (ছাত্রশিবির কর্মী), পিতা-মৃত তাজুল ইসলাম, সাকিন-শরিষপুর, নতুনবাজার, থানা-ওসমানীনগর, জেলা-সিলেট, ৫। এইচ.টি.এম ফখর উদ্দিন (৫০), (সভাপতি, দয়ামীর ইউনিয়ন বিএনপি), পিতা মৃত আব্দুল আলী, সাকিন-কুরুয়া, ৬। এশাদ আহমদ (২৪) (সভাপতি, ছাত্রশিবির, দয়ামীর ইউনিয়ন), সাকিন- শুয়ারগাঁও, ৭। কামরুল ইসলাম (২২), পিতা-শানুর মিয়া, (ছাত্রদল কর্মী), সাকিন- কাইয়াকাইর, ৮। এমরান আহমদ (২১) (সাংগঠনিক, সম্পাদক, আদালত দয়ামীর ইউনিয়ন ছাত্রদল), সাকিন-আতাপুর, ৯। জাহিদুল ইসলাম (২৫) (উছমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা), পিতা-ইসলাম উদ্দিন, সাকিন-ধিতপুর, ১০। ফারুক মিয়া (২৮), পিতা-মইন মিয়া, সাং-দৌলতপুর, থানা-ওসমানীনগর, ১১। আলা উদ্দিন রিপন (৩৫) (বিএনপি নেতা), পিতা-মৃত আলী আহমদ, সাকিন-সুরিরখাল, থানা-ওসমানীনগর, ১২। ছামাদ হোসেন (২৩) (ছাত্রশিবির কর্মী), পিতা-শামীম আহমদ, সাকিন-রনাগুলপুর, ১৩। মাজেদ আহমদ (২৫), (ছাত্রদল কর্মী), পিতা-আলতাফ হোসেন সুমন, সাকিন-সোয়ারগাঁও, ১৪। হাবিব মিয়া (২৭), (ছাত্রদল কর্মী), পিতা-মৃত আব্দুর রউফ, সাকিন-দয়ামীর, সর্ব থানা-ওসমানীনগর, জেলা-সিলেটস।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল থেকে আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যান্য আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে রয়েছে। আহত এসআই মিজানুর রহমান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।







