শেষ হলো যুক্তরাজ্যের নির্বাচন : ক্ষমতার পালাবদলের বার্তা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২৪, ৬:০০:৪৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ১৪ বছর পরে ক্ষমতার পালাবদলের বার্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটপর্ব শেষ হলো ব্রিটেনে। জনমত সমীক্ষার ফল সত্যি হলে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) দ্বিগুণ ভোট এবং তিন গুণ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কিয়ের স্টার্মারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি।
যুক্তরাজ্যে এ বছরই প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের ব্যালট পেপার নেওয়ার আগে পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। সেক্ষেত্রে ভোটারদের ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে বলা হয়।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে রাত ১০টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা) পর্যন্ত। তার পরেই শুরু হয় গণনা।
নিয়ম অনুযায়ী, লন্ডনের রাত ১২টায় (প্রকাশিত হয় প্রথম ফল। তার পরের ফল প্রকাশিত হয় যথাক্রমে রাত ৩টায়, ভোর ৪টায়, ভোর ৫টায় এবং সকাল ৭টায়। তাই আজ শুক্রবার স্পষ্ট হয়ে যাবে আগামী ৫ বছরের জন্য ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা কে হতে চলেছেন।ভোটগ্রহণ শুরুর পরই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তিনি এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নর্থালারটনের একটি গ্রামের হলে তাদের ভোট কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
অন্যদিকে, লন্ডনের উত্তরে ক্যামডেনে ভোট দিয়েছেন বৃটেনে বিরোধী লেবার দলের নেতা স্যার কিয়ের স্টারমার ও তার স্ত্রী ভিক্টোরিয়া।ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৪০ হাজার কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন।
৪৪ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কনজারভেটিভরা ১০০-র নীচে নেমে শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ ফল করতে পারে বলেও পূর্বাভাস মিলেছে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায়।
জনমত সমীক্ষা বলছে, লেবার পার্টি ৪০ শতাংশ ভোট পাবে, টোরিরা পাবে ২০ শতাংশ ও নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী দল রিফর্ম ইউকে পাবে ১৬ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ, ভোট কেটে টোরিদের বড় ক্ষতি করতে চলেছে রিফর্মিস্টরা। ইঙ্গিত মিলেছে, গতবার টোরিদের ভোট দেওয়া এক-তৃতীয়াংশ ব্রিটিশ নাগরিকের ভোট এবার কট্টর অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম ইউকে পেতে চলেছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির আসনও এবার অন্তত তিন গুণ বেড়ে ৪০ ছুঁতে পারে বলে ইঙ্গিত রয়েছে বিভিন্ন সমীক্ষায়। লড়াইয়ে রয়েছে গ্রিন পার্টি, রিফর্ম পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি-সহ ছোট-বড় প্রায় ৯৮টি রাজনৈতিক দল এবং নির্দলেরাও।
ইতিহাস বলছে, ব্রিটেনে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার ফল অতীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র, জটিল এবং মিশ্র জনবিন্যাস, প্রধান শত্রুকে হারাতে ‘ট্যাকটিক্যাল ভোট’- এ সবই নানাভাবে কঠিন করে তোলে নির্বাচনী ফলাফলের অনুমান।
লন্ডনে দলীয় প্রচারসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, লেবাররা ‘বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ পেয়ে গেলে বিপন্ন হয়ে পড়বে ব্রিটেনের গণতন্ত্র। যদিও ভোটের আগেই কার্যত হার স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাক্তন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুরেলা ব্রেভারম্যান। সংবাদপত্রে লেখা নিবন্ধে তার মন্তব্য- ‘আমাদের এখন বিরোধী আসনে বসার সময় হয়ে গিয়েছে। একই সুর সুনাকের দল টোরি পার্টির প্রবীণ নেতা, ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস দফতরের সচিব মেল স্ট্রাইডের গলাতেও।