পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে ৭ দিনের আলটিমেটাম ব্যবসায়ীদের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুলাই ২০২৪, ৯:১১:২৫ অপরাহ্ন

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাথর কোয়ারিসমূহ খুলে দেওয়ার দাবিতে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন উপজেলার পাঁচ ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠ। রোববার বেলা ১২টায় থানাবাজারে আয়োজিত এক সভায় এই দাবি জানানো হয়। এসময় উপজেলার বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারী সমুহ হতে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহরন এবং ভরাট হয়ে যাওয়া ধলাই নদীর উৎস মুখ খননের দাবী জানান তারা।
পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে তারা মিছিল, সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পাথর কোয়ারি খোলার ব্যাপারে সরকারী ঘোষণা না এলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে এ অঞ্চলের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান সিলেটের পাঁচ এমপি। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ তাঁদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজির উদ্দিনসহ পাঁচ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনগুলো হলো- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড, উপজেলা স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতি, উপজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন, উপজেলা বেলচা শ্রমিক ইউনিয়ন ও পূর্ব ইসলামপুর হেমার শ্রমিক সমবায় সমিতি।
এসময় বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসংকটে পড়েছে। লাখো মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হয়েছে। এখন অভাব অনটন মানুষের নিত্যসঙ্গী। প্রান্তিক এ জনপদে বিরাজ করছে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। অথচ যুগ যুগ ধরে পাথর সংগ্রহ করেই এ অঞ্চলের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। দেশের নির্মাণ শিল্পের অন্যতম উপাদান হিসেবে এ অঞ্চলের পাথর ব্যবহৃত হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ধলাই নদীর উৎসমুখে জমা হয়েছে রাশি রাশি পাথর। তৈরি হয়েছে বালির স্তূপ। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে ইতিমধ্যে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। ধলাই নদীর উৎসমুখের পাথর অপসারণ করা হলে নদীতে নাব্যতা ফিরবে। এ অঞ্চলের মানুষ বন্যা ও ঢলের বিপর্যয় থেকেও রক্ষা পাবে।
বক্তারা আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ, উৎমা এবং শাহ আরেফিন পাথর কোয়ারির পাথর আহরণের ফলে মানুষের ব্যাপক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। তখন পাথরের ব্যবসায় বিনিয়োগ হতো শত শত কোটি টাকা। জীবিকা নির্বাহ হতো লাখো মানুষের। কোয়ারি বন্ধ থাকায় এই মানুষগুলো এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে অনেকে দেউলিয়া হয়েছেন। ঋণ-খেলাপের দায়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ করে একটি দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন সাধন করা যায় না উল্লেখ করে বলা হয়, পরিবেশের দোহাই দিয়ে দেশের কোয়ারিগুলো বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে আমদানী করা হচ্ছে নি¤œমানের পাথর। আমদানীর নামে ঢালাওভাবে রিজার্ভের ডলার ব্যয় করায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভের ঘাতটির কথা শোনা যায়। অথচ কোম্পানীগঞ্জের পাথর গঠন বিচারে টেকসই, সুগঠিত এবং উচ্চ মান সম্পন্ন। এই কোয়ারিগুলো চালু হলে মানুষ তার কর্মসংস্থান ফিরে পাবে। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। রাষ্ট্রের রিজার্ভও ঠিক থাকবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি আব্দুল জলিল মেম্বারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সদস্য মোখলেছুর রহমান, গোলাম কিবরিয়া, হোসেন নুর, ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হেকিম, উপজেলা স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিমুল ইসলাম আঙ্গুর, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম, ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, আব্দুর রহমান, আব্দুল আজিদ, ফজর উদ্দিন ও মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।





