সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২৪, ২:১৮:২৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার ও দৈনিক নয়াদিগন্ত এর সিলেট প্রতিনিধি আবু তুরাব হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিলেটের ৩ পুলিশ কমিশনার ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ সহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে। অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরো ২০০/২৫০ জনকে। গতকাল ২১ জুলাই রাতে নিহতের ভাই আবুল আহছান মোঃ আযরফ (জাবুর) বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন-১। আসাদুজ্জামান খান কামাল, পিতা-আশরাফ আলী খান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ২। মোঃ সাদেক দস্তগীর কাউছার, পিতা-অজ্ঞাত, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম উত্তর),সিলেট, ৩। আজবাহার আলী শেখ, পিতা-অজ্ঞাত, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, এসএমপি, সিলেট, ৪। মিজানুর রহমান, পিতা-অজ্ঞাত, সহকারী পুলিশ কমিশনার, কোতোয়ালী মডেল থানা, সিলেট, ৫। কল্লোল গোস্বামী, পিতা-অজ্ঞাত, ইনর্চাজ, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ী, বিপি-৮৪১১১৩৪২২৪, ৬। মঈন উদ্দিন, পিতা-অজ্ঞাত, সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোতোয়ালী মডেল থানা, এসএমপি, সিলেট, ৭। ফজলুর রহমান, পিতা-অজ্ঞাত, ওসি (তদন্ত), কোতোয়ালী মডেল থানা, এসএমপি, সিলেট, ৮। রাহাদ আহমদ শাফি (২২), সাংগঠনিক সম্পাদক, ১১ নং শরীফগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, পিতা-আক্তার হোসেন, সাং-পানিয়াগা, ওয়ার্ড নং-০৫, থানা-গোলাগঞ্জ, সিলেট, ৯। আপ্তাব উদ্দিন, পিতা-মৃত আবুল হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, কাউন্সিলর, ৭নং ওয়ার্ড, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট, ১০। পীয়ুষ কান্তি দে, পিতা- ননী গোপাল দে, সহ সভাপতি, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ, সাং- নবীন-৩,ভাঙ্গাটিকর, ১২নং ওয়ার্ড, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট, ১১। সাজলু লস্কর, পিতা-আব্দুস ছালাম লস্কর, পি এস, মেয়র, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সাং- শাহজালাল উপশহর, সিলেট, ১২। রুহেল আহমদ, পিতা-ফিরোজ মিয়া (সাবেক মেম্বার), সভাপতি, সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ, কাউন্সিলর, ৩২নং ওয়ার্ড, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট, সাং-পূর্ব ভাটপাড়া, মেজরটিলা, থানা-শাহপরাণ (রহঃ), জেলা-সিলেট, ১৩। সজল দাস অনিক, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-দাড়িয়াপাড়া, ২নং ওয়ার্ড, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ, ১৪। শিবলু আহমদ ( মোঃ রুহুল আমিন), পিতা-শাহ নেওয়াজ, সাং লোগাঁও, ১১নং গজনাইপুর, থানা-নবীগঞ্জ, জেলা-হবিগঞ্জ, বর্তমানে-নেহার মঞ্জিল, চালিবন্দর, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-সিলেট, ১৫। সেলিম মিয়া, পিতা-অজ্ঞাত, কং/২১৬৮, কোতোয়ালী মডেল থানা, এসএমপি, সিলেট, ১৬। আজহার, পিতা-অজ্ঞাত, কং/১৯৫৭,বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ী, কোতোয়ালী মডেল থানা, এসএমপি, সিলেট, ১৭। ফিরোজ, পিতা-অজ্ঞাত, কং/২২৫৫, ১৮। উজ্জল, পিতা-অজ্ঞাত, কং/১৬০৩, উভয় থানা- কোতোয়ালী মডেল, জেলা-সিলেট সহ অজ্ঞাতনামা ২০০/২৫০ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গতকাল ২১ জুলাই দুপুর ২টার দিকে নগরীর বন্দর বাজারস্থ মধুবন মার্কেটের সামনে রাস্তায় ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে সাংবাদিক আবু তাহের মোঃ তোরাব সহ অন্যান্য সাংবাদিকগণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন আসামীগণ সাংবাদিক তুরাবকে সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। পুলিশ কমিশনার মোঃ সাদেক দস্তগীর কাউছার সাংবাদিক তুরাবের বুকে সরাসরি গুলি বর্ষন করেন। এসময় অন্যান্য আসামীগণও তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে তুরাবের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত আসামীগণ চৌহাট্টার দিকে চলে যায়। তখন সহকর্মীরা গুরুতর আহত তুরাবকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে, তুরাব হত্যার খবর ছাড়িয়ে পড়লে নগরীতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। নগরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশাল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুনু মিয়া মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। তাই এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সহিত তদন্ত করছে।