ভরা শ্রাবণে সরগরম সিলেট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২৪, ৯:৪৪:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ভরা শ্রাবণে একদিকে আকাশ থেকে নামছে অঝোরে বৃষ্টি, বৃষ্টির পরশে শীতল হচ্ছে তপ্ত পৃথিবী। অন্যদিকে এই শীতল পরশে শনিবার অন্যরকম সরগরম হয়ে উঠে গোটা সিলেট।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে সিলেটে ছাত্র-জনতার ঢল নামে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে চৌহাট্টা-জিন্দাবাহার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। সময় যত বাড়ে জমায়েত তত বড়ো হতে থাকে।
দুপুরের পর মেঘের আড়াল থেমে মুখ বের করে সূর্য। রোদের তাপে ধীরে ধীরে গরম হতে থাকে প্রকৃতি। সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েত হচ্ছেন লোকজন। বিকেল তখন ৩টা। হঠাৎ করে সবকিছু কালো করে অঝোর ধারায় নামে বৃষ্টি। নিমিষেই সব শীতল হয়ে যায়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলকারীদের স্লোগানে মুখরিত হতে থাকে পুরো চৌহাট্টা এলাকা। একসময় সেই জোয়ারে সাধারণ মানুষেরও ঢল নামে। কেউ আসেন আন্দোলনে সংহতি জানাতে, কেউ আসেন দেখতে। দেখতে আসা অনেকেই জানান ছাত্রদের উপর হামলা কোনোভাবে মানা যায়না। নিরস্ত্র মানুষের উপর কেন এমন আচরণ। অহংকারের মাত্রা কোন পর্যায়ে গেলে মানুষ এত উগ্র হয় যে কথায় কথায় রাজাকার বলে। এসব আচরণে আমরা ত্যক্ত বিরক্ত। তাই আমরা দেখতে এসেছি, সাহস দিতে এসেছি। জনতার উপর কোনো বড়ো শক্তি নেই। জনতা এক হলে কোনো জুলুমই টিকতে পারে না। এবার তাই মনে হচ্ছে।
আশপাশের অনেক মার্কেট ও দোকান দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকলেও দুপুরের পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে দোকান বন্ধ করলেও বেশিরভাগ দোকানি আশপাশে ছিলেন। তারা বলেন, ইচ্ছে করছে ছাত্রদের সাথে মিশে যাই। আমরা যে সবাই সরকার বিরোধী তা নয় কিন্তু আমরা অন্যায় বিরোধী। ছাত্রদের সাথে যা হচ্ছে তা স্পষ্ট অন্যায়। কোনো সুস্থ মানুষ এই অন্যায় সমর্থন করতে পারে না। যারা এখনও নির্লজ্জভাবে এই অন্যায় সমর্থন করে যাচ্ছে এরা মূলত দেশ ও মানুষের জন্য রাজনীতি করছে না তারা করছে তাদের স্বার্থে তাই। আমার তাই অপেক্ষা করছি যদি সহ্যের সীমা অতিক্রম করে তবে আমরাও নেমে যাবো।
এদিকে বিকেলের দিকে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও গুলি করে। এতে শহর জুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তাঘাটে মানুষজন কমে যায়। জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা-আম্বরখানা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সন্ধ্যার পর এসব এলাকায় ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। এছাড়া সকাল থেকেই শহলে লোকজন ও যানবাহন ছিল একেবারে কম। রিকশা ও অটোরিকশায় ছিল যাত্রী সংকট। চালকরা মহাজনের প্রতিদিনেই জমার টাকাই তুলতে পারছেন না বলে জানান। সবার মধ্যে এর ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করতে দেখা যায়।