পলিটিক্স করলে পার্টি অ্যাক্টের মধ্যে করতে হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০২৪, ৯:০৩:৫৯ অপরাহ্ন
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশে যোগ না দিলে বিকল্প ব্যবস্থা
জালালাবাদ ডেস্ক: কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতার অপব্যবহারে যদি দখল-চাঁদাবাজি করে তাদের পা ভেঙে দিতে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথম কর্মদিবসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এদেশে পলিটিক্স করতে হলে পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্টের মধ্যে করতে হবে। এটা আপনাদের পছন্দ হলেও না হলেও। আমি যতদিন পর্যন্ত আছি, আমি এটা করে ছাড়বো। আপনারা স্বৈরাচারী হয়ে যাবেন এটা তো হবে না।
উপদেষ্টা বলেন, সব রাজনৈতিক দলগুলোকে আমি একটি মেসেজ দিচ্ছি। একটি পলিটিক্যাল পার্টির অবস্থা আপনারা দেখেন, এত বড় একটা দল, এত ঐতিহ্যবাহী একটা দল। যার নামের সঙ্গে স্বাধীনতা জড়িত, আজকে তাদের সদস্যদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের জায়গায় যদি মনে করেন আমি আসলাম, বাজার দখল করবো, ঘাট দখল করবো, এটা দখল করবো, চাঁদাবাজি করবো। কিছুদিন করেন। কিন্তু আমি সেনাপ্রধানকে বলেছি, অনুরোধ করেছি, পা ভেঙে দিতে আপনাদের। আই ডোন্ট কেয়ার, ইউ গো টু হেল।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি শুনেছি কারওয়ান বাজারে গিয়ে চাঁদাবাজি করেন। কিছুক্ষণ আগে শুনলাম ব্যাংক দখলে নেওয়ার জন্য মারামারি হচ্ছে। কিছুটা সময় আছে, এখন করেন। ভাই আমি পাবলিকও না, আমি পলিটিশিয়ানও না, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে ফৌজি মানুষ। যা বলবো তাই করবো। এখানে একদিন থাকি, আর তিন দিন থাকি।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজি করবেন যেই পার্টি হোক। আমি বারবার বলছি চাঁদাবাজি করবেন না। মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবেন না। তাহলে আমি জনগণকে বলবো আপনাদেরকে পিটাইয়া দিতে, যারা চাঁদাবাজি করেন। জনগণের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, যারা চাঁদাবাজি করবেন তাদেরকে ওখানেই ধরেন। কি করা লাগে, সেটা আমরা করবো। শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। দেশ এভাবে চলতে পারে না।
পুলিশকে লাঠিয়াল বানানোর হুকুমদাতাদের ধরা হবে: এদিকে দুপুরে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশকে যারা লাঠিয়াল বাহিনী বানিয়েছে সেসব হুকুমদাতাদের দেশে না পেলে বিদেশ থেকে ধরে আনা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশকে সীমান্তে ব্যবহার করা অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল। এসময় তিনি যেসব পুলিশ সদস্য এখনো কাজে যোগ দেয়নি তাদের বিষয়ে আমরা একটি সময় বেঁধে দেব। এই সময়ের মধ্যে তারা যোগ না দিলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সীমান্তে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেটা পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল, যা একদমই ঠিক হয়নি। পুলিশের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা খুবই বেদনাদায়ক। যদিও তারা যে কিছুই করেননি সেটাও বলব না। হাজারও তরুণ মারা গেছেন পুলিশ ও অন্যের গুলিতে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশকে আর কেউ লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। আমি চেষ্টা করব, যারা হুকুমদাতা, ছিলেন তাদের ধরতে। দেশে না পেলেও বিদেশ থেকে আনব।’ এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পুলিশ ছাড়া আমাদের সমাজটা চলতে পারে না। প্রতি দিনই খবর পাচ্ছি, বিভিন্ন জায়গায় থেকে বলছে, “স্যার আমার বাড়ি চুরি হচ্ছে”। যদিও সেনাবাহিনী বের হয়ে আছে, কিন্তু এটা তাদের কাজ না। পুলিশের যে কাজ সেটা সেনাবাহিনী করতে পারে না, তবুও তারা করছেন।’
এর আগে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ হাসপাতালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের খোঁজ খবর নেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশের আইজি মো. ময়নুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।