এখনো চড়া চালের বাজার, নিম্নবিত্তের নাভিশ্বাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১০:১২:৪২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালিন সরকার গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে অচলাবস্থা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমতেও শুরু করেছে। তবে চালের বাজারে অস্বস্তি রয়েই গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চালের দাম কেজিপ্রতি যেভাবে ২-৪ টাকা বাড়ানো হয়েছিল, এখনো সে অবস্থা রয়ে গেছে। বলা হচ্ছে, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দলীয় অনেক নেতার চালকল বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে চালের দাম এখনো কমছে না।
এদিকে, দুদিন ধরে বাজারে সবজি, ডিম ও মুরগিসহ বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে দেখা গেছে। তবে চালের দাম না কমায় নিম্নবিত্তের নাভিশ্বাস রয়েই গেছে। জানতে চাইলে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। ফলে পরিবহন খরচ বেড়েছে। এখন সেটা স্বাভাবিক হওয়ার কথা। তবে আরও কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। যার মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের অনেক মিল বন্ধ থাকা। সে কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চালের দাম সহনীয় না হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে গত সপ্তাহে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রির কার্যক্রম বন্ধ থাকা। যে কারণে রোববার থেকে ওএমএস কার্যক্রম শুরু হয়েঠে। এছাড়া দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। শিগগির চালের বাজারে স্বস্তি ফিরবে।
এদিন নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। বাজারে মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা আর পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের চেয়ে কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেশি। মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকা কেজি দরে।
নগরীর কালিঘাটের এক চাল ব্যবসায়ী বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় পরিবহন বন্ধ থাকায় মোকামে চালের দাম প্রতি বস্তায় ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যা এখনো কমেনি। এদিকে, প্রধান এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় সীমিত আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। সবচেয়ে বেশি নাজেহাল দরিদ্র মানুষেরা। এ নিয়ে তাদের অভিযোগ ও ক্ষোভের শেষ নেই। কিন্তু চালের বাজারে কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।
আম্বরখানার চাল বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সবজির দাম কমেছে, ডিম-মুরগির দামও কমেছে। কিন্তু চালের দাম কমে না। আসলে সিন্ডিকেট করে একবার দাম বাড়ালে আর কমানো হয় না।সুবিদবাজারে গিয়ে কথা হয় আমেনা বেগম নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, এমনিতেই চালের বাজার চড়া; তার মধ্যে ওএমএস বন্ধ। আমাদের এখন না খেয়ে থাকার অবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের পাইকারী বাজারে বর্তমানে চালের দাম- মিলগেটে স্বর্ণা ৫৪-৫৮ টাকা, ব্রি২৮ ৫৮-৬০ টাকা, সুভলতা ৬২-৬৪ টাকা, জিরাশাইল বা মিনিকেট ৬৫-৬৮ টাকা এবং কাটারিভোগ সেদ্ধ চাল মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যা গত মাসের চেয়ে কেজিপ্রতি প্রায় ৪ টাকা পর্যন্ত বেশি।