আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার দাবি ছাত্র আন্দোলনের, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে হুশিয়ারি
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ আগস্ট ২০২৪, ৯:৩১:৪১ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী-জনতা হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করার মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শেখ হাসিনার বিচার ও ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এই দাবি জানান।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যমের সাথে আমাদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, ছিল ও থাকবে। এই অভ্যুত্থানে গণমাধ্যমেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কিছু গণমাধ্যম হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চায়। ছাত্র-জনতা তা কোনোভাবেই হতে দেবে না। আমাদের মূল দাবি, হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার (অব) এম সাখাওয়াত হোসেন সহ সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। তাই আপনারা বক্তব্য দেওয়ার আগে ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্র মনে রাখবেন। খুনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, আমরা যেভাবে স্বৈরাচারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়েছি, ঠিক একইভাবে স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের চেষ্টাকারীদেরও নামাতে সময় লাগবে না।
উল্লেখ্য: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার (অব) এম সাখাওয়াত সোমবার এক বক্তব্যে এদেশে আওয়ামীলীগের অনেক অবদান আছে উল্লেখ করে তাদের প্রতিবিপ্লবের চিন্তা না করে সংগঠিত হওয়ার পরামর্শ দেন। তার এই বক্তব্যের পরই আন্দোলনকারীসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে অভিযোগ করেন সরাসরি তিনটি গণহত্যার সাথে জড়িত একটি দলের বিষয়ে উপদেষ্টা কীভাবে এমন কথা বলেন। তিনি কী তবে আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে শপথ নিয়েছেন। এরপরই বিকেলে তাকে সতর্ক করে বক্তব্য দিলেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে সমাবেশে ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতির বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম ছিল। সেই দখলদারিত্বের রাজনীতির পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না। ক্যাম্পাসকে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে।
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা আজকে আপনাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক করতে এসেছি। আমরা ৫ আগস্ট দেশ থেকে স্বৈরাচার তাড়ানোর পর থেকে কিছু কুচক্রী মহল ক্যু করার চেষ্টা করছিল। আমরা ছাত্র-জানতা তা দমন করেছি।
তিনি বলেন, এরপর সর্বশেষ বিচার বিভাগীয় ক্যু করার চেষ্টা করলে আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে এখনো একটি মহল ক্যু করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা ছাত্র-জনতা তাদের পরিকল্পনা সফল হতে দেব না। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান।
এ সময় ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে হাসিনার সব ষড়যন্ত্রকে রুখে দেব। আওয়ামী লীগ পরাজিত শক্তি নানান কূটকৌশল আঁকছে। আমরা ছাত্র-জনতা কোনোভাবে ১৫ আগস্টের ক্যু’র পরিকল্পনা সফল হতে দেব না।