দক্ষিণ এশিয়ায় নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে ভারত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ৮:৩৩:২৮ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করেই প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকার প্রধানদের রাজধানী নয়া দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এমনকি ঐতিহাসিক শত্রু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। মোদি সরকার সেই প্রথম দিন থেকেই বারবার বলে আসছে তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে প্রতিবেশীরা। এই পলিসির নাম তিনি দিয়েছিলেন ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ বা ‘প্রতিবেশীরা সবার আগে’।
কিন্তু ওই ঘটনার এক দশক পরে এসে এখন দেখা যাচ্ছে একদম উল্টো চিত্র। ভৌগোলিকভাবে যেসব দেশ ভারতের প্রতিবেশী, তাদের কারো সাথেই দেশটির ভালো সম্পর্ক নেই। চীনকে মোকাবিলা করতে অনেক পশ্চিমা দেশই ভারতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আর সে কারণে দেশটির সঙ্গে অনেক পশ্চিমা দেশেরই সুসম্পর্ক দেখা যায়।
যদিও প্রতিবেশীরা উল্টো ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেছে। এক ভুটান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গেই আর ভারতের সুসম্পর্ক নেই। মোদি ক্ষমতায় আসার সময় যে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় ছিল, সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। অপরদিকে বাংলাদেশসহ যেসব দেশে ভারতপন্থী সরকার ছিল, জনবিক্ষোভের মুখে তাদেরও পতন হয়েছে।
২০২২ সালে ভারতপন্থী রাজাপাকসে সরকারকে উৎখাত করে শ্রীলঙ্কার জনগণ। এরপর দেশটি এখন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করছে। দিল্লির আপত্তি সত্বেও চীনের গোয়েন্দা জাহাজ বন্দরে ভিড়তে দিচ্ছে দেশটি। এদিকে নেপালের ক্ষমতায় আছেন কে পি শর্মা ওলি, যিনি কট্টর ভারত-বিরোধী বলেই পরিচিত।
মালদ্বীপেও গত বছর ভারত-পন্থী একটি সরকারকে হঠিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন চীনপন্থী মোহাম্মদ মুইজু। তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই তার দেশ থেকে সব ভারতীয় সেনা সদস্যকে বের করে দিয়েছেন। তার দলের ‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন মালদ্বীপে বেশ ভাল সাড়া ফেলেছে। পাশাপাশি তিনি কোনো রাখঢাক না রেখেই চীনের দিকে ঝুঁকছেন।
এমন কী যে ভুটান সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভারতের ওপর নির্ভরশীল, তারাও এখন চীনের সঙ্গে আলাদাভাবে সীমান্ত আলোচনা শুরু করেছে। আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে যে দুটো সরকার এখন ক্ষমতায়, তাদের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল নেই। আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে ভারতের এখনও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি।
এই তালিকায় সবশেষ সংযোজন বাংলাদেশ। গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ সরকার। দলটি বরাবরই ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালান হাসিনা। বর্তমানে বাংলাদেশে যারা সরকার গঠন করেছে, তারা ভারতের মিত্র হিসেবে পরিচিত নন।