১০ সচিবের চুক্তি বাতিল

জালালাবাদ ডেস্ক: গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন সরকার ছাত্র-জনতার চাহিদার আলোকে প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল শুরু করেছে। বাতিল করা হচ্ছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, কাউকে পাঠানো হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসরে। দেওয়া হয়েছে নতুন নিয়োগ। আওয়ামী সরকারের নিয়োগ করা ১০ জন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বুধবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়।

যাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, সড়ক, পরিবহন বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।

এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য (সচিব) মো. খাইরুল ইসলাম।

এর আগে এক প্রজ্ঞাপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তার জায়গায় বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আলমগীর কবির স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।

অবসরে পাঠানো জাহাংগীর আলম একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের সচিব ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার চেষ্টার অভিযোগ অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শত শত লোক মারা যাওয়ার পেছনেও তাকে দায়ী করা হয়।

এদিকে একই প্রজ্ঞাপনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানকে আভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. এমদাদউল্লাহ মিয়াকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই সরকারের সহযোগীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিংবা তারা নিজেরা সরে যাচ্ছেন। জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রায় সব সেক্টরে বিগত সরকারকে সহযোগিতা করা কর্মকর্তারা আতঙ্কে রয়েছেন।

এছাড়া ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শককে বদলি করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক আলতাব হোসেনকে বরিশাল বিভাগ এবং বরিশাল বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স জাহাঙ্গীর কবিরকে (সাবেক সিনিয়র জেল সুপার ঢাকা) ঢাকা বিভাগে বদলি করা হয়েছে। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের উপসচিব তাহনিয়া রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।