অনুপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন ইউএনও

জালালাবাদ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যেসব উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন, সেসব উপজেলায় জনসেবা নির্বিঘœ রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখা থেকে এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে।

বুধাবর থেকে কার্যকর হওয়া এই আদেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদে অনেক চেয়ারম্যান ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং যোগাযোগ করেও তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়। উপজেলা পরিষদের অনেক প্যানেল চেয়ারম্যানও কর্মস্থলে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এজন্য উপজেলা পরিষদগুলোর অনেক ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনসেবা বিঘিœত হচ্ছে। তাই যেসব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্যানেল চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন সেসব উপজেলা পরিষদে সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলু রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সরকার পতনের পর কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, সিটি করপোরেশন মেয়র ও কাউন্সিলর অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে জনগণের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত সেবাপ্রাপ্তি বিঘিœত হচ্ছে এবং জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ইস্যুতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল, সব বিভাগীয় কমিশনার, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তারা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি উদ্ভূত বিশেষ পরিস্থিতির কারণে কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, সিটি করপোরেশন মেয়র, কাউন্সিলর তাদের কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে জনগণের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত সেবাপ্রাপ্তি বিঘিœত হচ্ছে এবং জনস্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত সব সেবা দ্রুততার সঙ্গে দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হলো।

অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পরিবর্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজ বিবেচনায় উপজেলা পর্যায়ের প্রয়োজনীয় সংখ্যক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের দায়িত্ব দেবেন। এসব কর্মকর্তাকে তিনি নিবন্ধকের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদান করবেন। পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব কর্মকর্তা নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পৌরসভার মেয়রদের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট জেলার উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) প্রয়োজনীয় সংখ্যক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের দায়িত্ব দেবেন। তিনি এসব কর্মকর্তাকে নিবন্ধকের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদান করবেন। পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব কর্মকর্তা নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করবেন।

অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট জেলার উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) প্রয়োজনীয় সংখ্যক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের দায়িত্ব দেবেন। এসব কর্মকর্তাকে নিবন্ধকের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদান করবেন। পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব কর্মকর্তা নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কর্মসুচি চলমান রয়েছে। মাঝখানে যেহেতু একটা বিরতি ছিল। অনেক জায়গাতেই মেয়র নেই। ডেঙ্গু বিশেষ করে ঢাকা সিটিতে যেহেতু ফোকাস থাকে, প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যেখানে যা প্রয়োজন সেটা তারা করবেন।