পুলিশ লাইন্সে স্বল্প পরিসরে চলছে সিলেট এসপি অফিসের কার্যক্রম
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০২৪, ৯:২৬:৪৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : শেখ হাসিনা সরকার পতন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে গত ৫ আগস্ট দুর্বৃত্তের হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ভস্মিভুত হয় সিলেট এসপি অফিস। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে বন্দরবাজারস্থ পুলিশ সুপারের কার্যালয়টি। এরপর থেকে কর্মবিরতি পালন করেন পুলিশ সদস্যগন। পরবর্তীতে ৮ আগস্ট থেকে ফের কাজে যোগ দেন পুলিশ। চালু হয় এসএমপির ৬টি থানাসহ জেলা পুলিশের কার্যক্রম। তবে চালু করা সম্ভব হয়নি এসপি অফিসটি।
যদিও সিলেট পুলিশ লাইন্সের একটি ভবনে স্বল্প পরিসরে এসপি অফিসের কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া এসপি অফিস সংস্কারের পর সব কার্যক্রম শুরু হবে। আপাততঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ কয়েকটি কার্যক্রম চলছে পুলিশ লাইন্সের ভবন থেকেই।
এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার এএসপি মো. সম্রাট তালুকদার। তিনি বলেন, অফিসটি সংস্কার করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু কাজ তো চালিয়ে যেতে হবে। তাই আপাতত পুলিশ লাইন্স থেকেই স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। আপাতত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কার্যক্রম চলছে। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এখন করা যাচ্ছেনা। কারণ ভেরিফিকেশনের মেশিনটি দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কার্যক্রমও শুরু করা হবে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন (৫ আগস্ট) বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সিলেটের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, সরকারি ও প্রশাসনিক বিভিন্ন অফিস, মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করা হয় সিলেট এসপি অফিসের। অগ্নিকা-ে পুলিশে ছাই হয়ে যায় কার্যালয় ভবনের পুরো ৪ তলার সব কক্ষের কাগজ-ফাইল ও জিনিসপত্র। অফিস প্রাঙ্গণে থাকা পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকি ভবনের ফ্যানও খুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। নিরাপত্তাহীনতায় সকল পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই সময় কার্যালয় ছেড়ে চলে যান। পুরো বিধ্বস্ত এ কার্যালয় মেরামত করে কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এসপি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে- অফিস কক্ষের পুড়ে ছাই হওয়া আবর্জনা সরাচ্ছেন শ্রমিকরা। প্রাঙ্গণে পড়ে রয়েছে ৩-৪টি গাড়ির পুড়া কঙ্কাল। নেই ৪ তলা ভবনের বেশিরভাগ কক্ষের দরজা-জানালা। কোনো আসবাব-পত্র অক্ষত নেই। ফাইল-পত্র ভষ্ম। ৫ আগস্ট বিকালে আগুন লাগানো হয়েছিলো এসপি অফিসে, প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যালয়টির বিভিন্ন কক্ষ থেকে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরদিন (৬ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে ধোঁয়া উঠা কক্ষগুলোতে পানি নিক্ষেপ করে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান (বিপিএম-বার) বলেন- এসপি কার্যালয়ে যেভাবে ধ্বংসযজজ্ঞ চালানো হয়েছে- মেরামত করে সবকিছু ঠিক করতে একটু সময় লাগবে। ইতোমধ্যে মেরামতের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। কার্যালয়ের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। কোনো ফাইল-পত্র বাঁচেনি। মাসখানেক সময়ের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার এএসপি মো. সম্রাট তালুকদার বলেন- জেলা পুলিশ লাইন্সের একটি ভবনে স্বল্প পরিসরে শুরু হয়েছে কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরও কয়েকটি জরুরি সেবা দু-একদিনের মধ্যেই শুরু হবে। কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক করা মূল কার্যালয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এসপি অফিসের সংস্কার কাজ করবে সরকারের গণপূর্তবিভাগ। তারা ভবনটি পরিদর্শন করে গেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে তারা শীঘ্রই সংস্কার কাজে হাত দিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।