অন্তর্বর্তী সরকার : উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয় বন্টন-পুনর্বন্টন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:১১:১৭ অপরাহ্ন
সাখাওয়াতকে স্বরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে
জালালাবাদ ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতেই নতুন চার উপদেষ্টা শপথ নিলেন। নতুন উপদেষ্টারা হলেন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শপথ নেওয়া নতুন চার উপদেষ্টার দপ্তরও বণ্টন করা হয়েছে। একইসাথে আগে শপথ নেওয়া উপদেষ্টাদের দপ্তরও পুনর্বন্টন করা হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।আর মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে দেওয়া হয়েছে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সেগুলো হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়।
লে. জে. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ব্রি. জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। তার দপ্তর পরিবর্তন করে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর নতুন করে সরকারে যুক্ত হওয়া আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।জানা যায়, এদিন বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার দপ্তর পুনবণ্টন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সালেহউদ্দিন আহমেদকে পূর্বের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আসিফ নজরুলকে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আদিলুর রহমানকে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; রিজওয়ানা হাসানকে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়; নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়; আসিফ মাহমুদ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; ফারুক-ই- আজমকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়; এবং ব্রি. জেনা. সাখাওয়াত হোসেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অন্য উপদেষ্টাদের দায়িত্ব অপরিবর্তিত থাকবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বর্তমান উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে নতুন চার উপদেষ্টার শপথবাক্য পাঠ করার পর তাঁরা প্রত্যেকে উপদেষ্টার শপথ ও গোপনীয়তার শপথে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে এখন উপদেষ্টার সংখ্যা দাঁড়াল ২১-এ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তাঁদের সঙ্গে নতুন এই চার উপদেষ্টা যোগ দিচ্ছেন। নতুন উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টন এখনো হয়নি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা, সড়ক পরিবহন ও সেতু, খাদ্য, কৃষি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব।
অন্য উপদেষ্টাদের মধ্যে সালেহউদ্দিন আহমেদকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে আইন; আদিলুর রহমান খানকে শিল্প; হাসান আরিফকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়; মো. তৌহিদ হোসেনকে পররাষ্ট্র; সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; শারমিন এস মুরশিদকে সমাজকল্যাণ; ফারুক-ই-আজমকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে স্বরাষ্ট্র; সুপ্রদীপ চাকমাকে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক; বিধান রঞ্জন রায়কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা; আ ফ ম খালিদ হোসেনকে ধর্ম; ফরিদা আখতারকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ; নুরজাহান বেগমকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ; মো. নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।