শরতে ‘আষাঢ়ের’ রূপ – সিলেটে সর্বোচ্চ বৃষ্টি: বাড়ছে নদ-নদীর পানি
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩০:০১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বর্ষা শেষে এসেছে শরৎ। আর শরৎ মানেই নীল আকাশ, তুলোর মতো মেঘের ওড়াউড়ি। পথের ধারে, নদীর তীরে কিংবা দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে কাশবনের সাথে আকাশের মিতালি। তবে এবারের শরৎ একটু অন্য মেজাজে। শরতের আকাশ সেজেছে আষাঢ়ের মেঘে। সিলেটজুড়ে টানা বৃষ্টির দাপট চলছে। অবিরাম বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ছন্দপতন ঘটেছে জনজীবনে।
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যারাত পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় ২৩৯ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় আছে। এ কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টিপাত বাড়ায় সিলেটের নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। এর মধ্যে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। নদীর ওই পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া সুরমা, সারিঘাট, ধলাই নদের পানিও বেড়েছে। তবে সেগুলোর পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও কাছাকাছি পৌঁছেছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মুঈদ বলেন, সিলেটে শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে নগরের বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন। মঙ্গলবার সকালেও বৃষ্টি থাকায় মানুষজনের চলাচল কম দেখা গেছে। যানবাহন চলাচলও কম ছিল।
নগরের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আগের চার দফা বন্যা ও সম্প্রতি আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে এমনিতে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। এর মধ্যে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে মার্কেট ক্রেতাশূন্য। এমন অবস্থায় ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়েছেন। আর পারা যাচ্ছেনা।
এদিকে, ভারী বৃষ্টির ফলে মৌলভীবাজার জেলার ৪টি নদনদীতে আবারও বেড়েছে পানি। জেলার কুশিয়ারা, মনূ, ধলাই ও জুড়ী নদে মঙ্গলবার আবারও পানি বেড়েছে।
এর মধ্যে মনু নদীর পানি মৌলভীবাজারের দুটি পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোয়াই নদীর পানি হবিগঞ্জের দুটি পয়েন্টে ৭৫ ও ১৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে পাহাড় ধ্বসে বড় গাছ ও বাঁশঝাড় সড়কে পড়ে যায়। এতে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।