সিলেটে আরো ৪ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসামী যারা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৪, ৯:৩৮:২৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিগত আন্দোলনে ছাত্রজনতার উপর হামলার ঘটনায় সিলেটে আওয়ামী লীগ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর মামলা দায়ের অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেটের আদালতে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন, সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের কর্মকর্তাদের আসামী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নগরীর সেনপাড়ার জুবেল আহমদ স্বপন। নগরীর সোবহানীঘাটে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। সেদিনের হামলায় তিনি আহত হয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী বেলাল আহমদ।
উক্ত মামলার আসামীর হলেন- পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান, ডিবির ডিসি তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী, সিআরটি প্রধান শাহরিয়ার আল মামুন, এডিসি সাদেক কাওসার দস্তগীর, ডিবির এসআই পলাশ চন্দ্র দাস, ডিসি উত্তর আজবাহার আলী শেখ, ডিবির এসআই মিল্টন রায় চৌধুরী, বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কাউন্সিলার জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে মোমেন, সাবেক এমপি রনজিত সরকার, কাউন্সিলার এসএম শওকত আমীন তৌহিদ, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, কাউন্সিলার মখলিছুর রহমান কামরান, কাউন্সিলার রুহেল আহমদ, গোলাম রহমান রাজন, রুহুল আমীন শিপলু, নাজমুল ইসলাম, রাহেল সিরাজ, সাদিকুর রহমান আজলা, শাহ আলম শাওন, দেবাংশু দাস মিঠু, দিলোয়ার হোসেন রাহি, হাবিবুর রহমান হাবিব, আকবর হোসেন অপু, কয়েছ আহমম সেলিম, হাবিব সাফাত, সুমন আহমদ, সাজলু লস্কর, শামীম ইকবাল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, উসমান আহমদ ফটিক, হিরক রঞ্জন দে পাপলু, লিলন আহমদ, মামুন আহমদ, নাঈম আহমদ, আবু সুফিয়ান চৌধুরী, আলী আশরাফ খান মাসুম, মনজুর, পুলিশ কনস্টেবল টিটু, স¤্রাট নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী, ফাহিম আহমদ, হামিদ, নিজাম উদ্দিন, অলিউর রহমান, গিলমান, ফখরুল ইসলাম দুলু, আব্দুল আহাদ সুমন, রহিম, জসিম উদ্দিন, কয়ছর আহমদ, রামদা আফজল, ফাইয়াজ খান সলিট, রজত কান্তি, ইমন দত্ত, ইসমাইল মাহমুদ সুজন, সাব্বির উরফে টুকাই সাব্বির, আবুল কাশেম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, আ’লীগ নেতা ফয়সাল আক্তার, ডেবিট কাদির, শাওন আহমদ।
এছাড়া মামলায় আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহার আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সাবেক সিসিক মেয়রসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এবার হকারদের মামলা :
সিলেট নগরীর লালদীঘি হকার্স মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলা লুটপাট ও ভাংচুররের ঘটনায় সদ্য সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিলেট জেলা শ্রমিকদল নেতা মোঃ রুহুল আমিন রুবেল।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মোমেন মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর মূলে আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দের জন্য সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে আদেশ প্রদান করেছেন।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামীরা হলেন- সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্য পদচ্যুত ও পলাতক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, এসএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, এসএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম উত্তর) সাদেক দস্তগীর কাউছার, নগরীর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কোতয়ালী মডেল থানার সদ্য বদলী হওয়া অফিসার ইনচার্জ মো: মঈন উদ্দিন, হাকার্সলীগ নেতা রুমন আহমদ, মহানগর আওয়ামী হকার্সলীগের সভাপতি রকিব আলী, মেয়রের পিএস শহীদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ জিল্লুর রহমান দারা, বঙ্গবন্ধুু প্রজন্মলীগ সিলেট মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক চাঁদাবাজ মো: ছুরত আলী, হাকার্সলীগ নেতা খোকন আহমদ, সুমন আহমদ ও যুবলীগ নেতা আব্দুল মুকিত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়- তৎকালীন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, তার এপিএস ও এসএমপির আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) এবং তাদের অধঃস্তন পুলিশ কর্তাদের নির্দেশে হাকার্সলীগ নেতা চাঁদাবাজ রুমন আহমদ, রকিব আলী ও মোঃ ছুরত আলী দীর্ঘদিন থেকে হকার্সদের উপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিল।
এদিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সায়েম খান।
শাবি গেইটে হামলার ঘটনায় আশফাকসহ ৯৪ জনের নামে মামলা:
এদিকে সিলেট নগরীর শাহজালাল ভার্সিটি গেইটে ছাত্রজনতার উপর হামলার ঘটনায় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও সিলেট সদর উপজেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আসামি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট নূরে আলম সিরাজী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম টুনু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ আহমদসহ ৯৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২/৩শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাও ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জুবেল আহমদ। আদালত এজাহারটি আমালে নিয়ে জালালাবাদ থানা পুলিশকে মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল খালিক। মামলায় অজ্ঞাত আরো ৩০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
গত ১৮ জুলাই বিকেল ৪টার সময় আখালিয়া ভার্সিটি গেইট এলাকায় ছাত্রজনতার মিছিলে গুলী ও হামলার ঘটনায় উক্ত মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় আসামীরা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: নিজাম উদ্দিন চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক ও মোগলগাও ইউপি চেয়ারম্যান হিরণ মিয়া, শামসুল ইসলাম টুনু মিয়া, পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম, এসআই আসাদুজ্জামান, এসআই মাহবুব আলম মন্ডল, এসআই বাহার, আ’লীগের মকসুদ, আব্দুল জলিল, আজম আলী, উস্তার আলী, নুরুল আমীন, সিরাজ উদ্দিন, কুতুব উদ্দিন, শাবাজ আহমদ, সোহেল, মিলাদ, নুর উদ্দিন, শাহিন, গিয়াস মেম্বার, কামাল আহমদ, জয়নাল আবেদীন, কয়সর আহমদ, এম লিয়াকত আলী, জাকারিয়া মাহমুদ, মনফর আলী, মুহিবুর রহমান মুহিব, দুদু মিয়া, গোলাম মস্তফা, নুরে আলম সিরাজী, নুরুল আমীন, ফয়সল, আজির উদ্দিন (পাশা), আব্দুল বাশার, আব্দুল মন্নান, জামাল মিয়া, নুরুল আমীন, ছাবিল মিয়া, মানিক মিয়া, সেলিম মিয়া, চুনু মিয়া, আব্দুল মালিক, বিলাল মিয়া, ইব্রাহিম আলী, লিলু মিয়া, সুলতান, শরীফ, সোপান, আনসার উদ্দিন, মুহিব্রু রহমান, হেলাল মিয়া, আরমান, মনির মেম্বার, গুলসান, তরিক উল্লাহ, সালাম, শায়েস্তা তালুকদার, রুহুল তালুকদার, বাবুল মিয়া, খলিল আহমদ, চুনু মিয়া, লিটন আহমদ, মস্তফা উল্লাহ, চান মিয়া, নেছার আহমদ, সাইদুর রহমান সৈয়দ, আবুল হাসনাত, জসিম উদ্দিন, ফজলুর রহমান, আব্দুল বাছিত, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল করিম রিপন, লোকমান আহমদ, আব্দুল জলিল, সাব্বাখ আলী, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল হক সাধু, বাবুল মিয়া, আলিনুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী, আইয়ুব আলী, কছির মিয়া, মাসুম আহমদ, সিয়াম আহমদ বাপ্পি, মহানগর কৃষক লীগের সেক্রেটারী জমশেদ সিরাজ উরফে কিলার জমশেদ, যুবলীগ নেতা জুবেল আহমদ উরফে ব্লাক জুবেল, আহমদ হোসেন মনু, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, আ’লীগের নুরুল আমীন খুকু,বাবুল আহমদ, আবু সুফিয়ান, মোক্তাদির ও সোহেল আহমদ। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ২০০-৩০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল খালিক জানান, আদালত অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিস্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আম্বরখানায় ছাত্র-জনতার উপর হামলার অভিযোগে মামলা:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সিলেট নগরের আম্বরখানা ও সাপ্লাই এলাকায় ছাত্রজনতার উপর হামলার অভিযোগে সিলেটের আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ইলক্ট্রিক সাপ্লাই (কলবাখানি) ব্লক-এ এর জালালী-৬১ নং বাসার বাসিন্দা খোরশেদ আলম (৩০)।
মামলায় তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, জাসদ নেতা লোকমান আহমদসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। আরও আসামি করেছন অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মো. আব্দুল হান্নান। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামীগণ হলেন- সাবেক এমটি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, ড. আহমদ আল কবির, লোকমান আহমদ, তামিম আহমদ, রাহেল সিরাজ, কামরান আহমদ, রিমাদ আহমদ রুবেল, কাউন্সিলার রেজওয়ান আহমদ, কাউন্সিলার তৌহিদ আহমদ, ইউনুছ আলী, জাকির আহমদ, জামাল আহমদ, সুলেমান আহমদ, মাছুম আহমদ মাছু, তানভির আহমদ, ফরহাদ আহমদ, আলী আশরাফ খান, আকিকুর রহমান চৌধুরী, এম এ মুগনি খোকা, নজরুল, মহসিন আহমদ, শাকিল আহমদ, ফারুক আহমদ মিছবা, কাউন্সিলার শেখ তোফায়েল আহমদ শেফুল, ইমদাদ হোসেন ইমু, ইলিয়াছুর রহমান জুয়েল, এম এ খান শাহীন, সামছুল ইসলাম, একরার হোসেন, জাকির হোসেন জুবেল, আলমাছ আহমদ শুকুর, সাকির আহমদ, ছাদিকুর রহমান সাকি, আলতাফ হোসেন, সেবুল আহমদ সাগর, রোহান খান, আশরাফ খান, গোলাম বাছিদ রিমন, মানিক মিয়া, জুমদিন আহমদ, কাউন্সিলার আবুল কালাম আজাদ লায়েক, ইমরান উরফের ইয়াবা ইমরান, সাব্বির উরফে টোকাই সাব্বির, মুশফিক জায়গীরদার, বিজিত চৌধুরী ও আব্দুল হেকিম।
আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী।