হাসিনাকে ফেরাতে বাধ্য নয় দিল্লি: আনন্দবাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৭:৩৩ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ৫ আগস্ট গন আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে অনুমতি নিয়ে বন্ধু দেশ ভারতে পৌঁছান তিনি। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে দিল্লির কাছের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন তিনি। সেফ এক্সিট নিয়ে দিল্লিতে পালালেও বাংলাদেশ থেকে বারবার উঠে আসছে তাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি। এরই প্রেক্ষিতে, ‘ঢাকা চাইলেই হাসিনাকে ফেরাতে বাধ্য নয় দিল্লি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে চলছে। তবে সেই সরকার এখনো শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠানোর কোনো কথা বলেনি। এদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে প্রতিনিয়ত মামলা হচ্ছে। এসবের অধিকাংশই গণহত্যা ও হত্যা মামলা। এসব বিষয় আমলে নিয়েই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি জানিয়েছেন হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার। ২০১৩ সালের বন্দী বিনিময় চুক্তি টেনে এই দাবি করেছেন ফখরুল।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, ফখরুল সরকারের কোনো পদে না থাকার কারণে তার কথার কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি দিল্লি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে তবে তা খতিয়ে দেখতে পারে ভারত। এদিকে মামলায় দোষী প্রমাণ হলে বা হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত না পাঠালে চাপে পড়বে ভারত। পত্রিকাটির একটি সূত্র বলছে, দিল্লি চেষ্টা করছে দ্রুতই শেষ হাসিনাকে তৃতীয় কোনো দেশে নিরাপদে পাঠিয়ে দেওয়ার। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে ২০১৩ এর বন্দী বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয় গুরুত্ব পায় না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ২০১৬ তে এই চুক্তিতে বেশ কিছু সংশোধন আনা হয়েছিল। কোনো দেশ যদি মনে করে, রাজনৈতিক কারণে কাউকে প্রত্যর্পণের দাবি জানানো হচ্ছে, তবে তারা দাবি মানতে বাধ্য নয়। আবার চুক্তির আর একটি ধারায় রয়েছে, প্রত্যর্পণের পরে দীর্ঘ কারাবাস ও প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলে অন্য পক্ষের দাবি খারিজ করা যাবে।
এদিকে কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার ফলে হাসিনার ভারতের থাকার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ভারত এখন পর্যন্ত তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি। লাল পাসপোর্টের বদৌলতে ৪৫ দিন পর্যন্ত ভারতে থাকতে পারতেন হাসিনা। সেই পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় এখন তিনি কোন স্টাটাসে ভারতে আছেন, সে বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য দেয়নি ভারত।
আনন্দাবাজারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত সরকারের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট হাসিনার পরিবার সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার পরে ইন্দিরা গান্ধী হাসিনা ও রেহানাকে আশ্রয় দেন। এই পরিস্থিতিতে একটি ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ সরকারের হাতে ভারত তাদের ছেড়ে দিতে পারে না। তাই তৃতীয় কোনও দেশে তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।