নির্মাণাধীন ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরে লুটপাট ভাংচুর পুড়িয়ে দেওয়া হয় এস্কেভেটর, বুলডোজার
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫:৫৭:০২ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রায় ২’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর। কাজ শুরুর এক মাসের মাথায় নির্মাণ সামগ্রী ও নির্মাণাধীন স্থাপনায় ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রড সিমেন্ট টিনসহ নির্মাণ সামগ্রী। কেটে কেটে নিয়ে যায় বুলডোজার চেইন ডোজার ও এস্কেভেটর। যার ফলে পিছিয়ে পড়েছে নির্মাণ কাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে যে রিদমে কাজ শুরু হয়েছিল তাতে বাঁধা সৃষ্টি করায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে কাজ। আবারও শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে। সেখানে থাকা যন্ত্রপাতি, মালামাল এবং নির্মাণাধীন স্থাপনায় ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ১৮ মাস মেয়াদে অনিক ট্রেডিং করপোরেশন ও মজিদ সন’স এন্ড মাসুদ স্টিল নামের ২টি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। এর মধ্যে তারা মাটি ভরাট ও বাউন্ডারি দিতে শুরু করে। বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে ৫ হাজার ৩শ ফুট জায়গা বাউন্ডারি দেওয়ার পর দখলদাররা সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। তখন থেকে পুরোদমে শুরু হয় নির্মাণ কাজ।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয় ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর। এ সময় কয়েকশত মানুষ হামলা চালায় নির্মাণাধীন স্থলবন্দরে। প্রথমে টিনের বাউন্ডারি ভেঙ্গে তারা ভিতরে প্রবেশ করে। পরে ভিতরে থাকা নির্মাণ সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি লুটপাট করে। সেখান থেকে ১১০ টন রড, ১ হাজার বস্তা সিমেন্ট, ৪টি জেনারেটর ও বাউন্ডারির ১ হাজার বান টিন নিয়ে যায়। এ সময় ২টি বুলডোজার, ২টি চেইন ডোজার ও ২টি এস্কেভেটর নিতে না পারায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পর সেগুলোকে কাঁটার দিয়ে কেটে ছোট ছোট টুকরো করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। তাছাড়া ভিতরে থাকা ১শ ফিটের অফিস বিল্ডিংটিও ভেঙ্গে দেওয়ালের ইট খুলে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলাকারীরা ঘরের জন্য নির্মাণাধীন পিলার ও লিন্টার ভেঙ্গে তার ভেতরের রডও নিয়ে যায়। ৫ আগস্ট বিকাল ৪টায় এই ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে চলে পরদিন পর্যন্ত। তাতে সেখানে আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
অনিক ট্রেডিং করপোরেশন এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলী আজম জানান, ভাংচুর করে কোন কিছু রেখে যায়নি। সব কিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। বড় বড় যন্ত্রপাতি বহন করতে না পেরে সেগুলো কেটে ছোট ছোট করে নিয়ে গেছে। বন্দরের কাজের জন্য সেখানে যা রাখা ছিল সব কিছু লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিছুদিনের ভিতর সবকিছু দেখে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর সারোয়ার আলম জানান, বন্দরের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সকল যন্ত্রপাতি, কাজের মালামাল, স্থাপনা ও বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে পুড়িয়ে লুটপাট করা হয়েছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু ভূমিদস্যু এগুলো করেছে। তাদের নামও পেয়েছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওরা ভিজিটে আসবে।