কমলগঞ্জে বন্যায় ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:৩০:৪৭ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাম্প্রতিক বন্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পাকা সড়কপথের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, এলজিইডি’র আওতাধীন ১৪টি রাস্তার প্রায় ৯০ কিলোমিটার গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়কের ক্ষতি হয়েছে এবং প্রায় ৫৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষতচিহ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে ওইসব সড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ইসলামপুর ও আদমপুরে এলাকায় বন্যার পানি নামার পর সড়কের ক্ষত ভেসে উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন সড়কে একাধিক স্থানে পানিতে ভেঙ্গে গেছে। কোথাও কোথাও পিচ উঠে বিশাল গর্ত হয়েছে। কোথাও ৫ থেকে ১০ ফুট সমপরিমাণ মাটি সরে গেছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি হলো কমলগঞ্জ ভায়া কুরমা ও ইসলামপুর ভায়া মাধবপুর পাকা সড়ক। ওই ২টি রাস্তায় প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া ঘোড়ামারা-ভানুবিল-নয়াপত্তন সড়কে ৫টি স্থানের মাটিসহ খোয়া ও পিচ পানির স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে। গোলের হাওর টু শ্রীপুর পাকা সড়কটিও ভেঙ্গে গেছে। সেখানে ৫০ মিটারের মতো সড়কের মাটি নেই। ব্যাপক ভাঙ্গনে গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা হয়েছে। একদিকে মানুষের বাড়িঘরে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে হিমসিম খাচ্ছেন, অপরদিকে চলাচলের রাস্তা অনুপযোগী হওয়ায় পড়েছেন মহাদুর্ভোগে। পায়ে হেঁটে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুদের যাতায়াত ভোগান্তি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কমলগঞ্জে বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামীণ আঞ্চলিক প্রায় ১২টি সড়কের প্রায় ৮৫ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। সড়কগুলো হলো কমলগঞ্জ-আদমপুর, ইসলামপুর-মাধবপুর, ভান্ডারীগাও-কুরমা, আদমপুর ইউপি অফিস-ভানুবিল জিসি, ভানুবিল-আদমপুর, নইনারপার-হকতিয়ারখোলা, আধকানি-জালালপুর সড়ক, উত্তর ভানুবিল-আদমপুর সড়ক, ছয়কুট-কালেঙ্গা সড়ক, আলীনগর ইউপি-আদমপুর সড়ক, শমসেরনগর-ডবলছড়া, আদমপুর-আধকানি-কেওয়ালীঘাট, ভুরভুরি বাজার-বৃন্দাবনপুর সড়ক, আতুরের ঘর-পতনউষার সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসলামপুর ইউনিয়নের ভান্ডারীগাঁও গ্রামের ইউনুছ মিয়া বলেন, বন্যায় পাকা রাস্তাটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লোক চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ। ভাঙ্গনকৃত রাস্তা দ্রুত মেরামতের দাবী করছি। ১৪টি সড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষ বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরাও গ্রামীণ যোগাযোগ সড়ক নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আবদাল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা সদরের একমাত্র রাস্তাটি বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। ফলে বর্তমানে বড়গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়নবাসী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল আজম বলেন, বন্যায় গ্রামীণ সড়ক প্রায় ৯০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতি হয়েছে এবং মেরামত করতে কমপক্ষে ৫৫ কোটি টাকা লাগবে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।