৯০ ভাগ নদী নাব্যতা সংকটে ভুগছে
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮:৪৫:২৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: দেশে বর্তমানে ১ হাজার ৮টি নদী থাকলেও ৯০ ভাগ নাব্যতা সংকটে ভুগছে বলে দাবি করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন। সাম্প্রতিক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হওয়া ভয়াবহ বন্যার প্রধান কারণ নদীর নাব্যতা সংকট বলে মনে করে সংগঠনটি।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সবুজ আন্দোলনর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার।
সভাপতির বক্তব্যে বাপ্পি সরদার বলেন, দেশে বর্তমানে ১ হাজার ৮টি নদী থাকলেও এর শতকরা ৯০ ভাগ নদী নাব্যতা সংকটে ভুগছে। ইতোমধ্যে দেশের শতাধিক নদী বিলীন হয়ে গেছে। ঢাকা বিভাগে ১৬৮টি, বরিশাল বিভাগে ৯০টি, খুলনা বিভাগে ১২৪টি, রাজশাহী বিভাগের ১১০টি, রংপুর বিভাগে ২৬৮টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৫টি নদী রয়েছে। সারা বাংলাদেশে ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বে জলরাশি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পাড় দখল ও দূষণে জর্জরিত।
তিনি বলেন, জেলাভিত্তিক জরিপে দেখা গেছে, শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শতকরা শতভাগ নদী দখল ও দূষণের শিকার। সামগ্রিক অর্থে নদীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হতে পারতো বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, কিন্তু বর্তমানে তা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত রাজনীতিবিদদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে নদীর দখল-বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের জলাশয় ও জলজ পরিবেশ ক্রমশ ধ্বংসের পথে। প্রাকৃতিক জলজ পরিবেশের গুণাগুণ হারিয়ে এখন দূষিত। পাশাপাশি ক্রমশ ভরাট হচ্ছে জলাশয়। জলাভূমি দূষণ, নগরায়ন, ফসলের ক্ষেতে কীটনাশকের অধিক প্রয়োগসহ বিভিন্ন কারণে আবাসস্থল সংকটে উভচর প্রাণীরা। ফলাফল স্বরূপ ক্রমেই কমছে কৃষকের নীরববন্ধু এই প্রাণীর সংখ্যা।
এসময় সংগঠনটি ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে। এরমধ্যে রয়েছে-
১.আন্তর্জাতিক নদীতে উজানের দেশ কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ ও নদীর নাব্যতা সংকট দূর করতে নতুন বাজেট প্রণয়ন। ২. দেশের সব নদীর সীমানা নির্ধারণ ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা। ৩. নদীমাতৃক অর্থনৈতিক গুরুত্ব তৈরিতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পিত আবাসন নীতি মালা প্রণয়ন করতে হবে। ৪. বিলুপ্তপ্রায় নদীর গতি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি যে সব নদীর অস্তিত্ব রয়েছে তা পুনরায় খননের ব্যবস্থা করা। ৫. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আন্ডারপাস নির্মাণ করতে হবে। ৬. শক্তিশালী ও স্বাধীন বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশন বাস্তবায়নে লোকবল নিয়োগ ও দোষীদের শাস্তি দিতে আইন সংস্কার করতে হবে। ৭. জলাশয় ভরাট বন্ধ ও সীমানা নির্ধারণ এবং খননের উদ্যোগ নিতে হবে। ৮. পরিবেশবাদী সংগঠন, গবেষক ও পরিবেশ সাংবাদিকদের সমন্বয়ে সরকারিভাবে এস্টেক হোল্ডার বডি তৈরি করে মাসিক সেবা চালু করতে হবে। ৯. পরিবেশ বিষয়ক গবেষণায় জোরদার করতে জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ ও সব প্রকার দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।