সিলেট চেম্বারের প্রতিবাদ সভা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:৩৪:১৯ অপরাহ্ন
বিগত স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থেকে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র বিরুদ্ধে একটি বিশেষ মহল কর্তৃক বিরূপ বক্তব্য ও প্রচারণার প্রেক্ষিতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স ও সর্বস্তরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা মঙ্গলবার চেম্বার কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু। সভার শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মহান শহীদদের রুহের মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর থেকে সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সুনাম ক্ষুণœকরণ ও বর্তমান পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে তৎপরতা চালাচ্ছে একটি বিশেষ মহল। তারা চেম্বারকে স্বৈরশাসকের দোসর বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং বেআইনীভাবে চেম্বার ঘেরাও করে অফিসে তালা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন, যা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র বিগত নির্বাচনে পদসংখ্যা ও প্রার্থী সংখ্যা সমান হওয়ায় ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হয়নি, তবে অন্যান্য সকল প্রক্রিয়া বিধি অনুযায়ী সম্পন্ন করা হয়েছে। সমঝোতার ভিত্তিতে মনোনয়নপত্র প্রদানের ব্যাপারে চেম্বারের অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে সম্মতি জানিয়েছেন এবং সহযোগিতাও করেছেন, কিন্তু বর্তমানে সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তাদেরই কয়েকজন আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, সিলেট চেম্বারের পরিচালনা পরিষদে সকল বড় দলের অনুসারী ও দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিগণ রয়েছেন, তাই ঢালাওভাবে সকলকে স্বৈরাচারের দোসর বলা কখনই সমীচীন নয়। চেম্বারের বর্তমান পরিচালনা পরিষদের অনেক পরিচালক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি জানান, সরকার পতনের পরপরই চেম্বারের পরিচালনা পরিষদের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতার জন্য শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে আহতদের সেবায় নিয়োজিত কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও সরকার পতনের পর সৃষ্ট বিরূপ পরিস্থিতিতে আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহের নিরাপত্তার জন্য সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে সভা করেছি। উক্ত সভায় সকল দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহের নিরাপত্তায় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন এবং চেম্বারের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তাদের আশ্বাস প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবসায়ীদের সাহস ও উদ্দীপনা দিতে নগরীতে মাইকিং এবং যেকোন সমস্যায় চেম্বারের সাথে যোগাযোগের জন্য হটলাইন নম্বর চালু করে ব্যবসায়ীদের সেবা প্রদান করেছি।
সিলেট চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, সিলেট চেম্বার ব্যবসায়ীদের সংগঠন। সরকারের সাথে সম্পর্ক রেখেই ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কাজ করতে হয়। গত ডিসেম্বরে সিলেট চেম্বারের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তখন জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান থাকায় এবং রাজনৈতিক কিছু সমস্যার কারণে চেম্বারের নির্বাচন বৃহৎ পরিসরে করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনটি আয়োজন না করলে চেম্বারের সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টি হতো। তাই বাধ্য হয়েই স্বল্প পরিসরে সিলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়েছে, তবে এখানে সকল দলের অংশগ্রহণ ছিল।
সিলেট চেম্বারের সাবেক সহ সভাপতি ও সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ দিলওয়ার হোসেন বলেন, আমরা সকল ব্যবসায়ীরা ভাই ভাই। এরকম একে অন্যের প্রতি কাঁদা ছোড়াছুড়ি কখনই কাম্য নয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সাবেক সহ সভাপতি মোঃ আতিক হোসেন, সাবেক পরিচালক মোঃ বশিরুল হক, ব্যবসায়ী নেতা জুবায়ের রকিব চৌধুরী, মোঃ আব্দুর রহমান দুদু, মুফতি নেহাল উদ্দিন, এন. আই. খান, দেওয়ান রুশো চৌধুরী, মোঃ আবুল কালাম, ইলিয়াস উদ্দিন লিপু, শাহজাহান সেলিম বুলবুল, মোঃ আক্কাছ খান, তানিমুল ইসলাম ও সৈয়দ আব্দুল হামিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী রাজিব, মোঃ আব্দুস সামাদ, ফয়েজ হাসান ফেরদৌস, সায়েম আহমেদ, মোঃ মাহদী সালেহীন, আরিফ হোসেন, মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী মুসফিক, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সদস্য নীহার রঞ্জন দাস, মোঃ খালেদ হোসেন এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি