কোম্পানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ১৫
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:১৯:০৯ অপরাহ্ন
এখনো ঢাকায় চিকিৎসাধীন স্কুলছাত্র শিহাব
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়েছেন ১৫ ছাত্রজনতা। তারা ৩ ও ৪ আগস্ট মিছিলে অংশ নিয়ে আহত হয়। এদের মধ্যে এখনো ঢাকায় উন্নত চিকিৎসাধীন রয়েছে শিহাব আহমদ। সে ৪ আগস্ট পরিষদ রোডে ছাত্রজনতার মিছিলে ছোঁড়া গুলিতে আহত হয়। গুলিবিদ্ধ ও আঘাতপ্রাপ্ত ১৫জন ছাড়াও টিয়ারগ্যাসে অন্তত ৫০জন আহত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ও আঘাতপ্রাপ্ত হন ভোলাগঞ্জের রোহান আহমদ, একরাম আহমদ ও জামিল আহমদ ছামি, ভোলাগঞ্জ গুচ্ছগ্রামের সায়মন আহমদ, রুস্তমপুরের আলীরাজ, টুকেরগাঁও এর শিহাব আহমদ এবং সুজন মিয়া, টুকেরবাজারের শাহিন আহমদ, পাড়ুয়ার হারুন আহমদ, পাড়ুয়া নোয়াগাঁও এর মিন্নত আলী, শাহ আরেফিন বাজারের সুলেমান আহমেদ ও রুবেল আহমেদ লাছুখালের শাকিল মিয়া, দক্ষিণ বুড়দেও এর রনি আহমদ এবং কাঁঠালবাড়ীর নাজমুল আহমেদ।
আন্দোলনের শুরু থেকে মাঠে সক্রিয় ছিলো রুহান আহমদ। ছাত্রলীগের হামলায় সে পরপর ২দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। ৩ ও ৪ আগস্ট মিছিলের অগ্রভাগে থাকায় তার শরীরে গুলি লাগে। রুহান জানায় ৩ আগষ্ট আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ গেইট অতিক্রম করছিলাম। এমন সময় পরিষদ গেইটের সামন থেকে আমাদের মিছিলে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এসময় তাদের সাথে আমাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। আমাদের মিছিল পরিষদ গেইটে ঢুকলে পুলিশের হাত থেকে বন্দুক নিয়ে গুলি চালায় ছাত্রলীগ। এতে আমার বুকে ছররা গুলি লাগে। এদিন ফার্মেসিতে দেখিয়ে কিছু ঔষধ খেয়েছিলাম। রাতে ছাত্রলীগ আমাকে বার বার হুমকি দিচ্ছিল মিছিলে না যাওয়ার জন্য। পরদিন ৪ আগস্ট আবারও ভোলাগঞ্জ থেকে মিছিল নিয়ে টুকের বাজার হয়ে উপজেলা পরিষদের দিকে যাই। পরিষদ গেইটে যাওয়ার আগেই পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলে অনেকেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে আবারও সবাই জড়ো হয়ে উপজেলা পরিষদ গেইট অতিক্রম করার সময় ছাত্রলীগের ছোড়া ৭টি রাবার বুলেট আমার পিঠে ও মাথায় লাগে। এদিন ছাত্রলীগ আমাকে টার্গেট করে মেরে ফেলার জন্য গুলি করেছিল। তাৎক্ষণিক আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আমাকে সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রায় ২০দিন পর আমি সুস্থ হই।
আন্দোলনের শুরু থেকে সক্রিয় থাকা দশম শ্রেণির ছাত্র শিহাব আহমদ ৪ আগস্ট আহত হয়ে এখনো ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পায়ে ২টি অপারেশন করা হয়। এখন কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। শিহাব জানায় আন্দোলনের শুরু থেকে মিছিল মিটিং করে আসছে অন্যদের সাথে। ৪ আগস্ট মিছিল নিয়ে উপজেলায় যায় তারা। পরিষদ গেইটের ভেতর ঢুকার পর পুলিশ তাদের দিকে গুলি ছুঁড়ে। একটি গুলি এসে তার পায়ের উরুতে লাগে। তার সাথের অন্যরা তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিলেট রেফার করে। সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ৫ আগস্ট রাতে তার পায়ে অপারেশন করা হয়। পরে ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিন ঢাকায় প্রেরণ করেন। ঢাকা মেডিকেলে আসার পর আবারও অপারেশন করা হয়। সেখান থেকে পিলখানা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পিলখানা হাসপাতালে আরেকটি অপারেশন করে তার পায়ে। এরপর থেকে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।
টুকেরগাঁও এর সুজন আহমদ জানায়, ৪ আগস্ট মিছিল নিয়ে থানার সমান দিয়ে যাচ্ছিল তারা। এমন সময় পুলিশের ছোঁড়া ৮টি রাবার বুলেট তার পিঠে লাগে। আহত হয়ে সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেয়। প্রায় ১৫দিন লাগে তার সেরে উঠতে।